পাতা:জীবনী সংগ্রহ - গনেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী । R(t) কন্যার শবদেহের মস্তকে আপনার চরণার্পণ করিয়া পুনরায় আপন আসনে আসিয়া উপবেশন করিলেন । যে কন্যাকে তিনি কত স্নেহে মানুষ করিয়াছিলেন, তাহাকে এই ভাবে বিদায় করিলেন। ইহাতেই বুঝা যাইতেছে যে, তিনি মায়ার বশীভূত ছিলেন না। আমাদের বাটীর সন্নিকটে হেরিসন রোডস্থ ৪৫ নম্বর ভবনে ইনি কয়েক বৎসর কাল অবস্থিতি করিয়াছিলেন। তথায় আমি প্রায়ই যাইতাম। প্ৰত্যহ সন্ধ্যার সময় সঙ্কীৰ্ত্তন হইত। ঐ সঙ্কীৰ্ত্তন শ্রবণ করিতে করিতে ইনি বাহ্যজ্ঞানশূন্য হইয়া প্রেমাবেশে যখন নৃত্য আরম্ভ করিতেন, তখন তত্রস্থ সকল ব্যক্তিরই মনে ভক্তিরসের উদয় হইত। তখনকার তাহার পলকহীন স্থিরনেত্ৰ, উৰ্দ্ধবিন্যস্ত দৃষ্টি এবং মাধুৰ্যপূর্ণ বদনকান্তি দেখিলে অভক্তেরও হৃদয়ে ভক্তির সঞ্চার হইত। যে সমস্ত গুণে মানব হৃদয় অলঙ্কত ও সমুজ্জল হয়, তন্মধ্যে দয়া প্ৰধান। দয়া প্ৰকাশ করিবার নানাবিধ উপায় আছে, তন্মধ্যে কায়িক, বাচিক ও আর্থিক এই ত্ৰিবিধ দয়াই প্ৰধান। কোনও ব্যক্তি কোনরূপ কষ্টে পতিত হইলে স্বীয় দৈহিক পরিশ্রমে যদি তাহার কষ্ট অন্তহিত করা যায়, তাহার নাম কায়িক । কোন ব্যক্তির বিপদুদ্ধারের জন্য অন্য কাহারও নিকট যে বাচনিক অনুরোধ করা যায়, তাহার নাম বাচিক, এবং অর্থদান দ্বারা বিপন্ন ব্যক্তির উপকার সম্পাদন করাকেই আর্থিক দয়া কহে। ভক্তবীর বিজয়কৃষ্ণের হৃদয়ে উক্ত ত্ৰিবিধ দয়ার কোনটীরই অভাব ছিল না । ইনি কত নিঃসহায় রুগ্ন ব্যক্তির রোগপ্রশমনের জন্য ডাক্তারের নিকট গমন, ঔষধ আনয়ন, র্তাহার। পথ্য প্ৰস্তুতকরণ, সেবা ও শুশ্ৰষা সাধন, তাহদের আত্মীয়সকাশে সংবাদাদি প্ৰদানের জন্য গমন প্ৰভৃতি কায়িক পরিশ্রমের দ্বারা অনেকের অনেক উপকার করিয়াছেন। ৪৫ নং ভবনে যখন অবস্থিতি করিতেন, তখন দেখিয়াছি,