পাতা:জীবনের ঝরাপাতা.pdf/১৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

অপকার যদি প্রত্যক্ষ করি, তোমার ঘর পুড়লে আমারও ঘর পোড়া যদি অবশ্যম্ভাবী জানি, তাহলে তোমার ঘরখানা নিরাপদ রাখার জন্যে আমারও চেষ্টা থাকবে। আমার লাভ হলে তুমিও যদি নিশ্চয়ই সে লাভের অংশীদার হবে জান, তবে সেটা সাধনের ভার তুমিও বহন করবে। নয়ত যে যার ছাড়াছাড়ি, ছিন্নভিন্ন থাকব। স্বার্থগত একতাবুদ্ধি তাই সকল ঐক্যের মূল। ইংলণ্ডের প্রত্যেকের জাতি হিসাবে পরস্পরের সঙ্গে ঐক্য সেই স্বার্থবুদ্ধিপ্রসূত। সেইটেই তাদের ঐক্য-ইমারতের ভিত্তি। দেশহিতৈষিতা শুধু, সেণ্টিমেণ্টের উপর, শুধু ভাবের একটা ধোঁয়ার উপর দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। তার নজরে একটা স্পষ্ট solid বস্তুর ছবি ফুটে ওঠা চাই—

 সর্বহিতে আত্মহিত, আত্মহিতে সর্বহিত।

একুশ

সম্পাদকীয় জীবন—স্বামী বিবেকানন্দ

এই সময়ে আমি একদিকে যেমন নানা বর্ত্মে জাতীয় জীবনকে প্রবাহিত করতে নিযুক্ত ছিলুম—সাহস, বল, বিদ্যা, একতা, স্বাবলম্বন ও স্বায়ত্তশাসন এই ষড়মার্গে—অন্যদিকে ভারতীর মধ্য দিয়ে সাহিত্যসেবায়ও একান্তভাবে নিবিষ্ট ছিলুম। নিজের লেখার প্রাচুর্য সে সময় ত ছিলই, কিন্তু নিজের লেখার আভরণেই ভারতীর সর্বাঙ্গ ভরে দেওয়ার অভিমান আমার ছিল না। বাণীর একটি সেবকমণ্ডলীকে ভারতীর পার্শ্বে আকৃষ্ট করে সমাদৃত করার লক্ষ্য আমার ছিল। আমার সোফার সামনের দেওয়ালে একটি লিস্ট টাঙ্গান থাকত—প্রায় চল্লিশটি নাম, কলকাতায় বা কলকাতার বাইরে যাঁদের বঙ্গসাহিত্য চর্চার ও তাতে কৃতী হওয়ার পরিচয় বা ইঙ্গিতমাত্র কোনরকমে পেয়েছিলুম। পালা পালা করে মাসের মধ্যে একবার করে তাঁদের সঙ্গে আমার পত্রের আদানপ্রদান হত। কুশল-প্রশ্নময় সবিনয় স্মারকলিপি এক একখানি একটি লেখার জন্যে। তাঁদের সৌজন্যে তাঁরা কোনদিন আমায় নিরাশ করেননি। সাহিত্য-ক্ষেত্রে বাঙ্গালী যে পুরো মাত্রায় chivarlry-সম্পন্ন তার সাক্ষ্য আমি দিতে পারি। আধুনিক রাজনীতিক্ষেত্রে তার পরিচয় অনেক মেয়েই পান না শুনতে পাই। রাজনীতি এমন

১৫৬