পাতা:জীবনের ঝরাপাতা.pdf/২৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বৃত্তিলাভ করিয়া শিল্প ও কারিগরি বিদ্যা শিক্ষার জন্য জাপানে গমন করেন। জাপান হইতে ফিরিয়া তিনি 'Calcutta Pottery Works' স্থাপন করেন। সত্যসুন্দর দেবের পুত্র সরল দেবের কথাও পুস্তকে উল্লিখিত হইয়াছে।


॥ কুড়ি॥

 ‘ভারতী' পত্রিকার গৌরব বৃদ্ধির জন্য সয়লা দেবী বাঙ্গালী ছাড়াও অবাঙ্গালী কয়েকজন বিখ্যাত মনীষীর ইংরেজী রচন্য বাংলায় অনুবাদ করিয়া প্রকাশিত করেন। লেখকদের নাম সহ এইরপ কয়েকটি রচনা:

 আর্য্যা নিবেদিতা: 'প্রত্যেক মা ছেলের জন্য কি করিতে পারে'—'ভারতী', জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬, 'বঙ্গমাতার কর্তব্য'—'ভারতী', শ্রাবণ ১৩০৬

 মহাদেব গোবিন্দ রানাড়ে: ‘পূর্ব্বকালের সমাজশাসন'—'ভারতী', শ্রাবণ ১৩০৭

 মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী: 'দক্ষিণ আফ্রিকার ভারতোপনিবেশ'-‘ভারতী', বৈশাখ ১৩০৯

 শিতোবু হোরী: 'জাপানের সনাতন আদর্শ'-'ভারতী', বৈশাখ ১৩১০

॥ একুশ॥

 স্বামী স্বরূপানন্দ: (? ১৮৭২-১৯০৬): পূর্বাশ্রমে স্বামিজীর নাম ছিল অজয়হরি বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ভবানীপুরে সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের সহযোগে হিন্দুশাস্ত্র চর্চা এবং হিন্দু-সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবনের উদ্দেশ্যে একটি চতুষ্পাঠী প্রতিষ্ঠা করেন। 'ডন' পত্রিকা সম্পাদনা এবং প্রকাশেও তিনি সতীশচন্দ্রের সহযোগী হন। স্বামী বিবেকানন্দের সংস্রবে আসিয়া তিনি ১৮৯৮ সনে তিনি সন্ন্যসব্রত গ্রহণ করেন। তিনি মায়াবতী অদ্বৈতাশ্রমের প্রথম অধ্যক্ষ। 'প্রবুদ্ধ ভারত' মাদ্রাজ হইতে মায়াবতীতে নীত হইলে তিনি ইহার সম্পাদনায় ব্রতী হন। আট বৎসর কাল তিনি যোগ্যতার সহিত 'প্রবুদ্ধ ভারত' সম্পাদনা করেন। তিনি সেবাপরায়ণ ছিলেন এবং যুবকগণকে সেবাধর্মে উদ্বুদ্ধ করেন। স্বরূপানন্দ হিন্দুশাস্ত্রে বিশেষ ব্যুৎপন্ন ছিলেন। তাঁহার বেদান্তব্যাখ্যা শ্রবণে শ্রোতৃগণ মুগ্ধ হইতেন। শ্রীমদ্‌ভাগবদ্‌গীতার তৎকৃত শঙ্করভাষ্য-ভিত্তিক ইংরেজী অনুবাদ শিক্ষিত-সমাজে বিশেষ প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছি। সরলা দেবী হিমালয়ে অবস্থানকালে স্বামী স্বরূপানন্দদের নিকট শাস্ত্র- ব্যাখ্যা শুনিয়া সবিশেষ মুগ্ধ হন


॥ বাইশ॥

 আনন্দ রায়:আনন্দচন্দ্র রায়: (? ১৮৪৪-১৯৩৫)। কবি গোবিন্দচন্দ্র রায়ের মধ্যম ভ্রাতা, স্বদেশী আন্দোলনের একজন বিশিষ্ট নেতা। আনন্দচন্দ্রের কর্মক্ষেত্র ছিল ঢাকায়। এখানে তিনি ওকালতি ব্যবসা করিয়া প্রচুর অর্থ উপাভ করেন। আলিপুর বোমার মামলা, কুমিল্লা শুটিং কেস্ প্রভৃতি রাজনৈতিক মোকদ্দমায় তিনি অন্যতম কৌঁসুলী ছিলেন। রাজনীতি এবং সমাজকর্মী হিসাবে তাঁহার প্রসিদ্ধি। শিক্ষা, শিল্প-প্রতিষ্ঠানাদির সঙ্গে তাহার ঘনিষ্ঠ যোগ ছিল। ঢাকা মিউনিসিপ্যালিটির প্রথম বেসরকারী চেয়ারম্যান, বঙ্গীয় প্রাদেশিক সম্মেলনের সভাপতি, ঢাকেশ্বরী কটন মিলস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে অন্যতম উদ্যোক্তা। ৯১ বৎসর বয়সে তিনি ইহধাম ত্যাগ করেন।

২২৯