R o জীবন্মত-রহস্য দত্ত। [ চিন্তিতভাবে ] বুঝিয়াছি। এখন আমি তাহদের মনের অভিপ্ৰায় অনেকটা বুঝিতে পারিলাম। জুলেখার ইচ্ছা, ডাক্তার বেণ্টউডের সহিত তোমার বিবাহ হয় । সে। আমার মার তাহাতে কিছুমাত্র ইচ্ছা নাই। অনিচ্ছাসত্ত্বেও যাহাতে তিনি সহজে বেণ্টউডের হাতে আমাকে সমর্পণ করিতে বাধ্য হন, সেইজন্য র্তাহার উপর দিয়া বেণ্টউড ও জুলেখা দু’জনে মিলিয়া ভিতরে ভিতরে এই সকল কাণ্ড করিতেছে । দত্ত। বলিতে পাের, জুলেখা কেন বেণ্টউডকে এত ভয় করে ? সে। জুলেখা ডাক্তার বেণ্টউডকে ভয় করে না, বেণ্টউডের কাছে টম্বরু নামে একটুকরা পাথর আছে, সেটাকেই জুলেখার যত ভয়। দত্ত সাহেব। আবার বিষম সমস্যায় পড়িলেন। কহিলেন, “টম্বরু ! ই, জুলেখার মুখে টম্বরুর নাম শুনিয়াছি বটে। সে জিনিষটা কি ?” সেলিন বলিতে লাগিল, “বাদামের মত ছোট একখণ্ড কৃষ্ণবৰ্ণ প্ৰস্তর। বাদামের মত ছোট-কিন্তু দেখিতে ঠিক বাদামের মত নহে ; সে রকম অস্বাভাবিক আকারের প্রস্তরখণ্ড বড়-একটা দেখিতে পাওয়া যায় না। ছোটনাগপুরের খাড়িয়ারা সেই প্ৰস্তরখণ্ডকে টম্বরু বলিয়া থাকে। তাহদের বিশ্বাস, সেই টম্বরুতে প্ৰেতিযোনী বাস করে। যাহার কাছে সেই টম্বরু পাথর থাকে, কেহ তার কোন শক্ৰতাচরণ করিতে পারে না । যদি কেহ করে, টম্বরুর সাহায্যে সহজে সে শক্রিকে নিপাত করা যায়। এই পাথরের উপরে তাহাদের বিশ্বাস ও ভক্তি কতদূর অবিচল ও দৃঢ়, তাহ শুনিয়া চমৎকৃত হইতে হয়। এমন কি এই টম্বরুকে দেখিতে, পূজাৰ্চনা করিতে তাহারা অনাহারে বিশক্রোশ পথ ছুটিয়া যায়। উহা হস্তগত করিবার জন্য তাহার এক-একটা নগর জালাইয়া দিতে এবং শতসহস্রের জীবন নষ্ট করিতে কিছুমাত্র কুষ্ঠিত হয়