পাতা:জীয়ন্ত - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাজেই তাদের নতুন সমস্যা শুধু এই যে সময় তারা পাৰে কম। তা ছাড়া আর কোন বিশেষ মুশকিল ঘটে নি। বাড়ীতে চড়াও হয়ে যারা টাকাটা লুট করে কাজের শেষে পালাবে তাদের কিংবা টাকাটা নিয়ে যারা শহরের বাইরে সরে পড়বে তাদের পক্ষে শহরের যেদিকে হাঙ্গামা তার ধারে কাছেও ঘেঁষতে হবে না। সেদিক দিয়ে কোন নতুন অসুবিধা সৃষ্টি হয় নি। তবে এরাও সময় পাবে আগের হিসাবের চেয়ে কম । সময়ের সমস্যাটাই গুরুতর। তবে সেজন্য আটকাবে না, কালীনাথ সাবধানে হিসাব করে দেখছে, শুধু স্পিড তাদের বাড়াতে হবে খানিকটা, আগের পরিকল্পনাকে কঠোর নিৰ্ম্মমভাবে ংশোধন করতে হবে একটু। যেমন, আগে যে ঠিক ছিল একেবারে চরম প্ৰয়োজন উপস্থিত না হলে কাউকে গুলি করা হবে না, ফাক আওয়াজ করে ভয় দেখিয়ে বুঝিয়েই কাজ হাসিলের চেষ্টা করা হবে শেষ পর্যন্ত, এ নিয়ম বদলাতে হবে। কেউ বাধা দিলে অসুবিধা সৃষ্টি করলে একবার সাবধান করেই গুলি করা হবে, মেরে ফেলার জন্য অবশ্য নয়, জখম করতে । দারোয়ান জগজীবন সত্যই দুঃসাহসী বেপরোয়া লোক, একনলা বন্দুক নিয়ে সে খুব সম্ভব বীরত্ব দেখাবার চেষ্টা করবে, ওর সঙ্গে সময় নষ্ট করা চলবে না। ভুবনকে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা যে আমরা দেশের জন্য টাকা তুলছি ভুবনবাবু, লিটনের স্মৃতিরক্ষার চেয়ে টাকাটার সদ্ব্যয় হবে, দরজা দিয়ে লাভ নেই-আমরা দরজা ভাঙবা, সিন্দুকের চাবির মায়ায় কেন মরণ ডেকে আনছেন, চাবিটা দিন, এসৰ বিস্তারিত মাজিত ভদ্র পন্থা চলবে না । সংক্ষেপ করতে হবে সব । পালানোর সময় সংক্ষেপ করার কথাও ভেবেছে কালীনাথ । ঠিক ছিল যে কাজের শেষে পাড়ার বাইরে থেকে গতিবিধি গোপন হয়ে হারিয়ে যাৰে লোকের কাছে। কয়েকজন তলিয়ে যাবে শহরেই এদিক ওদিক, একটি ঘোড়ার গাড়ী অপেক্ষা করবে বিছানাপত্রের বাণ্ডিল নিয়ে, সেই গাড়ীতে কয়েকজন ঠিক বারোটা দশের গাড়ীটা ছাড়ার সময় স্টেশনে পৌছে সাধারণ যাত্রীর মত টিকিট কেটে গাড়ীতে উঠবে। দুজন টাকার পুটলি নিয়ে গেয়ে লোকের বেশে অপেক্ষা করবে। পলাশপুরের রাস্তায়, শেষ ট্রেনের যাত্রী নিয়ে যে বাস ছাড়বে স্টেশন থেকে সেই বাসে উঠে ঝাউতলার শাল-বনের ধারে নিতাইনী গায়ের কাছে dà (3)-SS