পাতা:জেলের খাতা - বিপিনচন্দ্র পাল.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম চিন্তা

সুতরাং-God is Spirit. —ইত্যাদি উপদেশ সাকারোপাসনার প্রতিবাদ রূপে গ্রহণ করা সঙ্গত নহে। সে যাই হোক, এখানে জোহন ঈশ্বরের সপ্ত স্পিরিট বা সপ্তপ্রাণের উল্লেখ করিয়াছেন। এই সপ্তপ্রাণ, Seven Spirits of God সপ্ত প্রদীপ হইয়া এই সিংহাসনের সম্মুখে জ্বলিতে ছিল। ঈশ্বরের অঙ্গকান্তিরও বর্ণনা আছে-“Was to look upon like a jasper or saidine stone—কেবল অঙ্গের বর্ণনাই নাই। কিন্তু তাহা না থাকিলেও ঈশ্বর-স্বরূপের যে আভাস এখানে দেওয়া হইয়াছে, তাহা চাক্ষুষভাবে নিতান্ত স্থূল অর্থে সাকার না হইলেও, একান্ত নিরাকার, এমনই কি বলা যায়? ফলত, জোহন যখন বলিতেছেন যে —

 I saw in the right hand of Him that sat on the throne a book.

 যিনি সিংহাসনে বসিয়াছিলেন, তাঁহার দক্ষিণ দিকে আমি একখানা পুস্তক দেখিয়াছিলাম—তখন তাঁহার আকার প্রতিষ্ঠারই বা বড় বেশী বাকী রাখিয়াছেন কৈ? অন্তত বাম দক্ষিণ নির্দ্দেশ করিয়া তাঁহাকে পরিচ্ছন্নভাবে প্রতিষ্ঠিত করিয়াছেন, ইহা মানিতেই হইবে। অবশ্য “আধ্যাত্মিক” ব্যাখ্যা সকল পৌরাণিক কাহিনীতেই প্রযুক্ত হইতে পারে।

খৃষ্টের মুর্ত্তি

 জোহন ঈশ্বরের কোনো আকারের উল্লেখ না করিলেও খৃষ্টকে নিতান্ত সাকাররূপেই প্রতিষ্ঠিত করিয়াছেন। খৃষ্টের ইহলোকে মানুষী দেহ ছিল। দেহ স্বর্গে দেখা গেল না। জোহনের উক্তি পাঠে মনে হয় যে, খৃষ্টের মানুষী দেহ, তাঁহার স্বরূপ-দেহ নহে, যদিও ঐ রূপেতেই তিনি স্বর্গারোহণের পরেও শিষ্য-মণ্ডলী সমক্ষে উপস্থিত হইয়াছিলেন, সে কেবল তাঁহাদের প্রতীতির জন্য। স্বর্গে, ঈশ্বরের সিংহাসনে,—তিনি