পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮
ঝাঁশির রাণী।

সর্দার-মণ্ডলী কেল্লার ব হইতে দেখিতে লাগিলেন এবং রাণীঠাকুরাণী বপ্রের উপর ঘুরিয়া ফিরিয়া সৈন্যদিগকে উত্তেজিত করিতে লাগিলেন। সমস্ত রাত্রি, কেল্লার বপ্রের উপর এবং ইংরাজের ছাউনীমধ্যে মশাল জ্বলিতেছিল—এবং তাহারই আলোকে যুদ্ধ চলিতেছিল।

 ১ এপ্রিল তারিখে, প্রাতঃকালে রীতিমত যুদ্ধ আরম্ভ হইল। পূর্ব্ব। দিবসে, সহিউ-রোজ, ঝশির অবরোধের জন্য যত লোক আবশ্যক, তাহা স্থানে স্থানে রাখিয়া, অবশিষ্ট সৈন্য অতীব দক্ষতা সহকারে, শত্রু- দিগকে বিন্দুমাত্র জানিতে না দিয়া, ভিন্ন ভিন্ন দিকে প্রেরণ করিয়াছিলেন। এদিকে, তাত্যা-টোপে ইংরাজের সৈন্য নিতান্ত অল্প বিবেচনা করিয়া নিশ্চিন্তভাবে অবস্থিতি করিতেছিলেন। যুদ্ধ আরম্ভ হইবামাত্র, তিনি ঝুঁশির অবরোধ ভঙ্গ করিবার জন্য, একদল সৈন্য রণস্থলে প্রেরণ করিলেন; তাহারা ইংরাজদিগের আয়ত্ত্ব-সীমার মধ্যে আসিবামাত্র, স-হিউ- রোজ, শত্রুর দক্ষিণদিক্‌ আক্রমণ করিবার জন্য, কতকদল অশ্বারোহী ও পদাতিক সৈন্যকে নিয়োজিত করিলেন এবং তাহার অব্যবহিত তত্ত্বাবধান। ও নেতৃত্বাধীনে তাহার গোলন্দাজ সৈন্য গোলাবর্ষণ করিতে লাগিল। ইহাতে, শত্রুদল ছিন্ন ভিন্ন হইয়া চারিদিকে পলায়ন করিল এবং তাহাদিগের মধ্যে বিস্তর লোক মৃত্যুমুখে পতিত হইল। ইতিমধ্যে, ত্যাটোপের পক্ষ হইতেও তোপের মার সুরু হইল, তাহাতে ইংরাজ-অশ্বারোহী সৈন্য অনেক নিহত হইল। সেই সময়ে, তাত্যা-টোপের অধীনস্থ আফগান-সিপাহীরা উচ্চ উচ্চ ভূমির উপর উঠিবার চেষ্টা করিতেছিল, কিন্তু, কাপ্তেন লীড় তাহাদিগকে আক্রমণ করিয়া ধরাশায়ী করিলেন। এইক্ষণে, ইংরাজ পক্ষ হইতে গোলাবর্ষণ, ঘোড়সওয়ারের অনুধাবন ও পদাতিকদিগের আক্রমণ একেবারে এক সঙ্গে আরম্ভ হওয়ায়, পেশোয়ার সৈন্য নিরুপায় হইয়া পড়িল। এই পরাজিত সৈন্যদলের পশ্চাতে, এক ক্রোশ অন্তরে, তাতা-টোপের অধীনস্থ মুখ্য সৈন্যদল, বেটোয়া নদীর