• ঝিলে জঙ্গলে শিকার আমার পালা। বরাহনাজ এতক্ষণে একেবারে উন্মত্তপ্রায়, সমস্ত মুখ ব্যাদান করে গুরু বর্ষায় পায়ে বিপন্ন, ছন্দেবিহীন আন্দোলিত গতিতে অগ্রসর হচ্ছে। বাঙ্গলাদেশের মান তখন আমার যত। পঙ্কিলনিপান হতে আহােদ্ধার করেও আমি কি সম্মান পদবী লাভ করব না? এও কি একটা কথা ! কেমন করে যে সম্ভব হল বলতে পারি নে। পা তুলে ছিলাম কি নামান ছিল মনে নাই, আমার বা ফলক কিন্তু, সে লাফিয়ে আসা মাত্র,তায় গলাতে স্কন্ধদেশ ফুঁড়ে বেগিয়ে পড়ল, আমি পাশ কাটিয়ে গেলাম। যােঙ্গয় একটু বাঁকবার জন্যে, আমার একটু হাতের কৌশলে কি বরাহের বেয়াকুবিতে এটনাটা ঘটল জানতে পারলাম না। আমি যখন ঘােড় চাবকে ফিরে দাড়ালাম তখন শুরও দাড়িয়ে আছে—গলা দিয়ে উৎসধারে রক্ত ঝরছে। তবু সে শেষ পর্যন্ত হার মানেনি, খাড়াই ছিল। যমদয়ে দুরন্ত ভঘাত অতঃপর তাকে ধরাশায়ী করে দিলে। সেদিন আরো বরাহ মারা পড়েছিল, কিন্তু প্রথম বর্ষা-নিক্ষেপের সম্মান আমাকে পরে অত্র সঞ্চয় করতে হয়েছিল। আর একটা ঘটনা এখানে বলা যেতে পারে। একটি শূকর লম্ফ দিয়ে নালায় পড়েছিল। নালার পাড় একেবারে খাড়া। সে পথে পলায়ন তার পক্ষে অসম্ভব ব্যাপার। যে পথে নেমেছিল, সেই পথে ফেরা ভিন্ন দ্বিতীয় পন্থা ছিল না। তাকে অন্য পথে ফেরাবার চেষ্টা ব্যর্থ হল। সে একেবারে অগ্নিমূর্তি হয়ে আমাদের দিকে চেয়ে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। আমি আগে যেমন জাল ও বর্ষা নিয়ে শুকর-শিকারে যেতাম সেই উপায় অবলম্বন করে ঘােড় ছেড়ে পায়ে হেঁটে চললাম। অন্যের ঘােড়ায় যাবেন বলে পিছে রইলেন। আমাকে পায়ে হেঁটে আসতে দেখে সে ধৈর্য্যের সীমান্ত প্রদেশে পৌছিল একেবারে বায়ুবেগে এগিয়ে এল। সে ভালই হয়েছিল, বর্ষা তার অন্তর ছেদ করলে। সেও অবিলম্বে নালায় পড়ে গড়াগড়ি খেতে লাগল। বেচারী H. L, বহুপুর্বে সে পরপারের যাত্রীদের সাথী হয়েছে; শারীরিক অক্ষমতার জন্যে ঘােড় সওয়ার হতে পারত না, হেঁটেই আসছিল। যখন আমার ঘাড়ের উপর হাত রেখে উৎসাহে সুয়ে যাবে, “সাবাস, তখন জয়গর্বে আমার বুকটা একেবারে ফুলে উঠল। পলাশী ক্ষেত্রে যে বরাহ শিকার দেখেছিলাম সেটা উল্লেখ না করলে আমাদের বারের (Ba), অবিচার করা হবে। এ রাভিনয়ের নায়ক একজন সমব্যবসায়ী ব্যারিষ্টার। সব খুটিনাটি বর্ণনা জোগাড় করা অসম্ভব, তবে যতটুকু প্রকাশ ও যত খানি গােপন ছিল তাহাতে অনায়াসে বােঝা গেল, আর ক্ষণের মধ্যেই অশ্ব ও অশ্বারােহীর সখ্যবন ভ্রষ্ট ও বিচ্যুত হয়ে বিপুল শব্দে তিনি বরাহ অবতার পৃষ্ঠাগে অবতরণ করেন। যেরূপ গভীর ভাবে আপন পদবী সেখানে প্রােথিত করে প্রথিতযশা হয়ে ছিলেন, অদ্বিতীয় ক্লাইভ ও গুরুভার কামানের সাহায্যে ততটা সক্ষম হন নাই। অন্যান্য যাহ পমিয়া, পাল বৃ বণিত সেই স্মরণীয় প্রাতঃকাল হতে আর সে পথে কখনাে যাতায়াত করেনা। সেই হত তিনি অ ও শারােহীর সম্বন্ধ বিচ্যুতির মামলা ছেড়ে অন্য রূপ সম্বন্ধুভ্রংশ মামলায় মনােযোগ কমছে। এতে তাঁর অর্থ ও যশ দুই প্রচুর রূপে লভ্য হচ্ছে। একটা শেষ কথা তােমায় বলে রাখি। শূর ঝিয়ে ৰোবার আগে কাগজ ডি (paper chase) বেঙ্গায় ভ্যাসটা খুব পাকা করে নিয়ে। তল ঘােড়সওয়ার না হলে শুকর শিকার শত ব্যাপার, এক ল করে মনে রেখাে। T। । ।
পাতা:ঝিলে জঙ্গলে শিকার - কুমুদনাথ চৌধুরী - প্রিয়ম্বদা দেবী.pdf/১২৮
অবয়ব