ঝিলে জঙ্গলে শিকার। বিশেষতঃ এ ক্ষেত্রে এই অবােধ প্রথা ডিষ্ট্ৰীক্ট বাের্ডের কর্মচারীদের ফলাধিকারের সমূহ স্বরূপ হয়েছিল।তারা “মা ফলেষু কদাচন”, এ শাস্ত্রবিধি মানতে নিতান্তই অনিচ্ছুক ছিলেন। হাইকোর্ট এ জটিল সমস্যার অনেকটা নিরাকরণ করেছিলেন বটে, কিন্তু একান্ধ এ স্থলে উত্তমদ্ধ অর্থাৎ better half না থাকবারই কথা) কাজটা অপরাধ বলেই প্রতিপন্ন করবার জন্য বিশেষ চেষ্টা করেছিলেন। আমিও এ ব্যাপার গাছটিকে বেইজ্জত করা ছাড়া আর কি অপরাধ হতে পারে প্রমাণ কর্তে পারায় তৎক্ষণাৎ তাকে এই অনাহুত আলিঙ্গন হতে সত্বর মুক্তিদানের আদেশ প্রায় হয়েছিল আর কি!এই মগের মুলুকে যুবকটি তার ভাই’এর পক্ষ হতে আপীল করবার জন্যে অনুরােধ করতে এসেছিল। ছুটির বাকী কটা দিনের শিকার ছেড়ে দিয়েও আমি যদি অধিলম্বে যাত্রা করতাম তবুও আমার এ মহৎ আত্মত্যাগে লাভ বিশেষ কিছু হত না; কেননা তাহলেও আমি বিচারের সময়মত গিয়ে পৌঁছতে পারতাম না। যাই হােক মামলা মুলতবি রাখবার জন্যে যে আবেদন হয়েছিল সেটা গ্যবশতঃ গ্রাহ্য হয়েছিল। বুদ্ধিমান লােক সহজেই প্রশ্ন করতে পারেন ভালুক আর ভালুক শিকারের সঙ্গে কঁঠাল গাছও তার ছায়া চুরি, বেড়ার আলিঙ্গন, ইত্যাদির সম্বন্ধ কোথায় ? অপর অনৈয়ায়িক ব্যক্তির পক্ষে যাই হৌক শিকারী মাত্রই এর কাৰ্যকারণ সম্বন্ধ অনায়াসে উপলব্ধি করতে পারবেন সন্দেহ নাই। প্রথমত, ভালুকে কঁঠাল অত্যন্ত ভালবাসে। দ্বিতীয়তঃ, এদের আর মফঃস্বলের জজ সাহেবের নিরপরাধীর প্রতি কর্কশ কঠোর আচরণে বিশেষ সাদৃশ্য দেখা যায়। আর গত দশ বৎসরের মধ্যে এরূপ ব্যবহারে উৎসাহ লাভ করাতে ক্রমশঃ এভাব তাদের বেড়েই চলেছে। শেষতঃ, উভয়েই সমান হাস্যজনক। ভালুক বিনাশের তবু উপায় আছে, শেষােক্ত জীব কিন্তু অরণ্য কৰ্মচাৰীর ভাষায় বলতে গেলে “মন্দির আশ্রিত” বুলে তার কিছুই করবার যাে নেই। ভালুকের হাত হতে রেহাই পাওয়াও সম্ভব হতে পারে, অপর পক্ষ সম্বন্ধে সে ভরসা আদৌ নেই। দন্তবিকশিত হাস্য আর সহ ব্যতীত নন্যঃ পন্থা। | ভালুক প্রকৃতির একটা বিশেষত্ব যা আমি ইতিপূর্বে কিম্বা অতঃপর আর কখনও দেখি নি, এ স্থলে উল্লেখ করা যেতে পারে। আমার একজন বন্ধু সঙ্গে ছিলেন। তাঁর গুলিতে ভালুকের পিছনের পায়ে আঘাত লেগে পা দুখানি অকর্মণ্য হয়ে যায়। আর্তনাদ করতে করতে কোন রকমে সে আপনাকে টেনে নিয়ে চলেছিল। আমরা যখন তার কাছে এসে পোছিলাম তখন একটা গাছের গুড়িতে ঠেসান দিয়ে সে উচু হয়ে বসে আছে। আমাদের দেখে রেগে নিজের শরীরে কামড় দিয়ে অনেক খানি মাংস তুলে ফেললে। কিন্তু তখন তার বুকের উপরে গুলি লাগাতে মাটীতে গড়িয়ে পড়ে ইহলীল সম্বরণ করলে ! পরে আবিষ্কার হল সে ক্ষত স্থানের রক্তস্রাব বন্ধ করবার জন্যে তার মধ্যে পাতা পুরে দিয়েছে। আর এই উদ্দেশ্যে পালাবার সময় পথে মাঝে মাঝে থেমে গাছ গাছড়। উপড়ে নিয়েছিল। | ভালুক শিকারের জন্যে দিনের পর দিন প্রতীক্ষা করে থাকার মধ্যে কোন আমােদ নেই। আহার চেষ্টায় তার আসা যাওয়া বড় অনিশ্চিত। তাই, বন্দুকের ভাষায়, সহসা তাদের সঙ্গে পরিচয়ের আশায় পথ চেয়ে বসে থাকলে ফলে শ্রান্তি আর বিরক্তি ভিন্ন আর বড় কিছুই লাভ হয় না। যে সব প্রদেশে ভলুকের বহুল বসতি, যথাকালে, বিশেষতঃ মহুয়া ফুল যখন ফোটে, সেই পুষ্পিয় মধু ঋতুতে তার সাক্ষাৎকার দুর্লভ নয়। দেখতে জন্তুটি যেমন হাস্যজনক হোক না ব্যবহারে বড় সহজ নয়, বরং ভয়ানক। তার গতি রােধ করতে হলে যেমন স্থিরহস্ত হওয়া আবশ্যক তেমনই গুরুভার গুলিও