পাতা:টল্‌ষ্টয়ের গল্প - দুর্গামোহন মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
‌টল্‌স্টয়ের গল্প
২৯

ভাল করিয়াই টের পাইতে লাগিল। তার স্ত্রীর জামাটি গায়ে চাপিয়া ধরিয়া চলিতে চলিতে সে ভাবিতে লাগিল—‘এই ত ভেড়ার চামড়ার কথা বল! চামড়ার খোঁজেই গিয়েছিলুম ত, কিন্তু সারাদিনের পর এখন বাড়ী ফিরে যাচ্ছি, গায়ে একটা কোট পর্য্যন্ত নেই। তার উপরে একটা উলঙ্গকে সঙ্গে ক'রে নিয়ে চলেছি। এতে ম্যাট্রিয়ানা খুসী হবে খুব।’

 স্ত্রীর কথা মনে করিয়া সে একটু বিমর্ষ হইল, কিন্তু লোকটির দিকে আবার চাহিতেই মনে পড়িল, সে কি রকম করুণদৃষ্টিতে তার দিকে চোখ তুলিয়াছিল। অমনি তার মনের সমস্ত দুঃখ দূর হইল, মন আনন্দে নাচিয়া৷ উঠিল!

—৩—

 সাইমনের স্ত্রী সেদিন সব কাজ খুব সকাল সকাল সারিয়া রাখিয়াছিল। কাঠ কাটিয়া, জল আনিয়া, ছেলে-মেয়েদের খাওয়াইয়া এবং নিজের খাওয়াটাও শেষ করিয়া বসিয়া বসিয়া ভাবিতেছিল— কখন রুটি তৈরী কর্‌বে, সেই দিন, না তার পর দিন? তখনও একখানা বড় রুটি অবশিষ্ট ছিল।

 সে ভাবিল, ‘যদি সাইমন সহরে আজকে খেয়ে থাকে আর এখন এসে যদি খুব কম খায় তা হ'লে এ রুটিখানায় আরও একদিন চলবে।’

 রুটিখানা হাতে লইয়া বারে বারে ওজনটা বুঝিতে লাগিল ও ভাবিল, ‘আজ আর রুটি তৈরী কর্‌ব না। যে ময়দা রয়েছে তাতে আর একখানা রুটি হতে পারবে, কিন্তু কোনও রকমে এখানা দিয়ে শুক্রবার পর্য্যন্ত চালাতে হবে।’