বানরের এতক্ষণ খুব সাহস ছিল। কিন্তু ঝপাং আর ভতাঙের কথা শুনে আর সে বসে থাকতে পারল না। সে এক লাফে একটা গাছে উঠে, দেখতে দেখতে কোথায় পালিয়ে গেল।
আর বাঘের কথা কি আর বলব! সে যে সেইখান থেকে ছুট দিল দুদিনের মধ্যে আর দাঁড়ালই না।
তারপর থেকে আর শিয়ালদের কোনো কষ্ট হয়নি। তারা মনের সুখে সেই গর্তে থেকে দিন কাটাতে লাগল।
শিয়াল পণ্ডিত আখ খেতে বড় ভালোবাসে, তাই সে রোজ আখ খেতে যায়। একদিন সে আখের ক্ষেতে ঢুকে, একটি ভিমরুলের চাক দেখতে পেল। ভিমরুলের চাক সে আগে কখনো দেখেনি, সে মনে করল ওটা বুঝি আখের ফল।
শিয়াল কি না পণ্ডিত মানুষ, তাই সে আখকে বলে ‘ইক্ষু’, খেতক ‘ক্ষেত্র’, লাঠিকে বলে ‘দণ্ড’।
ভিমরুলের চাক দেখে সে বললে, ‘আহা, ইক্ষুর কি চমৎকার ফল! খেতে না জানি কতই মিষ্টি হবে?’ এই মনে করে যেই সে ভিমরুলের চাক খেতে গিয়েছে, অমনি সব ভিমরুল বেরিয়ে কি মজাটাই তাকে দেখাতে লাগল! শিয়াল তো প্রাণের ভয়ে খালি ছোটে, আর বলে, ‘ইক্ষুর ক্ষেত্রে আর যাব না।’
খানিক বাদে ভিমরুলগুলো তাকে ছেড়ে গেল। তখন সে ভাবলে, ‘ক্ষেত্রে তো রোজই যাই তাতে তো কিছু হয় না। ফল খেতে গিয়েই আমার বিপদ হল। তবে আর ক্ষেত্রে যাব না কেন? ফল না খেলেই হল।’ এই ভেবে সে বলতে লাগল, ‘যদি ইক্ষুর ক্ষেত্রে যাব, ইক্ষুর ফল আর না খাব!’ দুদিন সে খালি এই কথাই বলে।
তারপর যখন বেদনা একটু কমে এল, তখন সে ভাবলে, ঐ ফলটার ভিতর পোকা ছিল, তারাই আমাকে কামড়েছে। আগে যদি ফলটাতে নাড়া দিতুম তবে পোকাগুলি বেরিয়ে যেত। তারপর ফল খেতে কোনো কষ্ট হত না! আহা, সে ফল খেতে না জানি কতই মিষ্টি! তবে আর ফল খাব না কেন?