পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (ত্রয়োদশ কল্প প্রথম খণ্ড).pdf/২৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

סנשג הבלס Q যদি আমাদের স্বদেশের মঙ্গলকামনা করি, আমরা যদি আমাদের আত্মার মঙ্গলকামনা করি, তবে আমরা যেন কোন প্রকার ভয়ে ভীত না হইয়া ব্রহ্মনামের জয়ঘোষণা করিয়া কায় মনোবাক্যে সকলের হৃদয়ে ব্রহ্মনাম অঙ্কিত করিয়া দিবার চেষ্ট। করি। সেই মুক্ত পুরুষের স্বাধীনভাব যদি হৃদয়ে বদ্ধমূল হইয়া যায়, তবে তামরা অচিরাং সকল বিষয়েই স্বাধীনতা লাভ করিতে সক্ষম হইব । কিন্তু এইবারে আর একটা প্রশ্নের বিষয় বিবেচনা করিয়া দেখা যাউক । সে প্রশ্নটী এই যে, কি উপায়ে ব্রহ্মোপাসনা প্রচার করিতে চেষ্টা করিব ? এবিষয়ে কি আর সন্দেহ আছে যে জাতীয় ভাবের উপযোগীরূপেই প্রচার করা সর্বের্বাত্তম উপায় ? আমি যদি কতকগুলি মুসলমানের নিকট ব্রহ্মজ্ঞান প্রচার করিতে গিয়া কোরাণের পরিবৰ্ত্তে হিন্দুশাস্ত্র হইতে দৃষ্টান্ত দেখাই, তাহ ভাল, অথবা আমি যদি কোরাণ হইতে দৃষ্টান্ত দিই, তাহ। ভাল ? অামি যদিও উভয় পক্ষেই একই ব্রহ্মজ্ঞানের বিষয় বলিতেছি কিন্তু যদি বাস্তবিক সেই মুসলমানের অন্তরে ব্রহ্ম জ্ঞান প্রবেশ করাইবার আমার ইচ্ছা থাকে, । তাহা হইলে শেষোক্ত উপায়ই যে প্রশস্ত উপায়, সে বিষয়ে সন্দেহমাত্রও নাই । সেইরূপ খৃষ্টীয়দিগের মধ্যে বাইবেল প্রভৃতি তাহাদিগের উপযুক্ত উপায়ের । দ্বারা ই ব্ৰহ্মজ্ঞান প্রচার কর । অবশ্যক । আমরা হিন্দু, হিন্দু পরিবারে বেষ্টিত, হিন্দু আচার ব্যবহারে লালিত পালিত ; তখন | জাতীয়ের মধ্যে ব্রহ্মজ্ঞান প্রচার করিতে গলে হিন্দুর উপযুক্ত উপায় অবলম্বন করা কর্তব্য। আমরা পূৰ্ব্বতন ঋষিদিগের জ্ঞানভাণ্ডার মনুসংহিতা প্রভূতি শাস্ত্র বোয়ালিয়া ব্রাহ্মসমাজ ২৩৭ ـ = حجسيقان بن ضصقتدخضصد সকলকে অবমাননা পূর্বক কৰ্ম্মনাশা নদীর জলে নিক্ষেপ না করিয়া, তাহার মধ্য হইতে সার সত্য গ্রহণে সচেষ্ট হইব এবং সেই সত্য সকল দেশীয় শাস্ত্রের মধ্য দিয়া, দেশীয় ভাবের মধ্য দিয়। প্রচার করিলে সর্বসাধারণে আগ্রহের সহিত ধারণ করিবে । দেখ, শঙ্করাচাৰ্য্য র্তাহার মতকে সম্পূর্ণ দেশীয়ভাবে প্রচার করিয়া কতদূর কৃতকার্স, হইলেন । এদেশের শাস্ত্রে যখন উন্নত মত সকল প্রচাব করিতেছে, তখন সে সকল শাস্ত্রকে একেবারে ত্যাগ করি বার প্রয়োজন কি ? অল্পে অল্পে তাহার ংস্কার কার্ষ্যে প্রবৃত্ত হও । আমরা “সত্যং জ্ঞানমনন্তং ব্রহ্ম” প্রভৃতি অতি মহান সত্যবাক্য সকল কত পূৰ্ব্ব হইতে পাইয়াছি, ভাবিলে অবাক হইতে হয় । এ সকল আমরা বিজাতীয় ধৰ্ম্ম অনুকরণ করিয়া প্রাপ্ত হই নাই। তবে কেন আবার আমাদের পবিত্র ধৰ্ম্মকে বিজাতীয় ভাবে পঙ্কিল করিয়া তুলিব । ধৰ্ম্মের মধ্যে বিজাতীয় ভাব বিজাতীয় আচার ব্যবহার বলপূর্বক প্রবেশ করাইলে ধৰ্ম্ম বিকৃতভাব ধারণ করে । কিন্তু তাই বলিয়৷ বিজাতীয়ের গুণ মোটেই গ্রহণ করিব না, তাহা নহে ; তাহা ও গ্রহণ করিব দেশীয় ছাচে ফেলিয়। যদি আমাদের এই ভারতের আবালবৃদ্ধ নরনারী বিজাতীয় পরিচ্ছদ ধারণ করে, তাহাতে বিকৃত ফল উৎপাদন করিবেই। আমাদের খাটি দেশীয় পরিচ্ছদ (ধুতিচাদর) কৰ্ম্মক্ষেত্রের অনুপযোগী বলিয়। কি বিজাতীয় পরিচ্ছদ সৰ্ব্বাঙ্গীণ অনুকরণ করিতে হইবে ? তাহ। কদাপি নহে । উহাদের পরিচ্ছদের উপযোগিতাটুকু আমাদের দেশীয় পরিচ্ছদের মধ্যে প্রবেশ করাইয়া ল ও ; দেশীয় ছাচে গড়াইয়া তোল ।