পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (ত্রয়োদশ কল্প প্রথম খণ্ড).pdf/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S তত্ত্ববোধিনী পত্রিক রল ক্ৰন্দনধ্বনি জাগাইতেছে । এই শ্মশান ক্ষেত্রের প্রান্তরে দাড়াইয়া, শ্মশানের ভীষণতম সৰ্ব্বসংহারক চিতাগ্নি দেখিযা কে অার হাস্যরসে মগ্ন থাকিতে পারে ? কাহার হৃদয় না বিবেক ও বৈরাগ্যে পরিপূর্ণ হইয়া আসে ? কাহার অন্তরে না পরকালের ভীষণ রহস্যময় ভাব সবেগে আঘাত করিতে থাকে ? একবার এই সম্বৎসরের সন্ধ্যাকালে দাড়াইয়া দেখ যে, আমাদিগের চারিপাশ্বে মৃত্যুর পাশ কত প্রকারে জড়াইয়া আসিতেছে ! একটা সুদীর্ঘ বৎসর কি বৃথায়ই কাটাইলাম ! । বৎসরের প্রারম্ভে কোথায় ভাবিয়াছিলাম যে সংসার মরুভূমিতে জীবন প্রদান করিয়া উর্বর্বর করিব ; প্রেমবারি প্রদান করিয়া সরস করিব ; শান্তিবীজ রোপণ করিয়া শস্যশ্যামল করিব—কিন্তু পারিলাম কৈ ? একটা একটা করিয়া ৩৬৫ দিনই চলিয়া গেল কিন্তু আমার সে ইচ্ছা কার্য্যে পরিণত করিতে পারিলাম কৈ ? আজ দেখি জীবনের পরিবর্তে শ্মশানের চিতাভস্ম আনিয়াছি ; প্রেমাশুর পরিবর্তে শোকাশ্র অনিয়াছি । জীবন ও প্রেম কোথায় ফেলিয়া দিয়াছি, তাহার কি কিছু ঠিক আছে ? কি লষ্টয়া সংসার মরুভূমিকে শস্যশ্যামল করিব ? স্বয়ং জরা মৃত্যু ব্যধি দ্বারা অভিভূত হইয়া পরকে ভাল করিতে পারিব কি প্রকারে । সম্বৎসরের প্রারম্ভে যিনি আমাদিগের নিকট প্রেম ও জীবন জগতে বণ্টন করিয়া দিবার নিমিত্ত গচ্ছিত রূপে রাখিয়াছিলেন, আজ সম্বৎসরের শেষে সেই প্রেমদাতা পিতার নিকটে যাইয়া বলিতে হইবে যে “পিতা, তুমি যে আমাদিগকে অমৃত দিয়াছিলে, তাহার পরিবর্তে মৃত্যু আনিয়াছি ; তুমি যে জ্যোতি দিয়াছিলে, তাহার পরিবর্তে অন্ধকার আনিয়াছি ; তুমি যে পুণ্য দিয়াছিলে তাহার পরিবর্তে পাপ আনিয়াছি।” ধিক্ আমাদিগকে । হায়, আমরা সমুদয় হারাইলাম, তবুও আমাদিগের চেতনা হইল না ? অামাদিগকে দারুণ পাপযন্ত্রণা ভোগ করিতে হইতেছে, তথাপি আমরা কি তাহার প্রতীকারের চেষ্টা করিব না ? ঔষধ প্রস্তুত থাকিলেও তাহা গ্রহণ করিব না ? আমাদিগের যিনি পিতা, আমাদিগের যিনি মাতা, যিনি সখা, যিনি তপ্ত হৃদয়ের শান্তিবারি—তিনি যেমন শত শত শারীরিক ব্যাধির জন্য ঔষধ প্রস্তুত করিয়া রাখিয়াছেন, সেইরূপ এই গুরুতর মানসিক পাপব্যাধির জন্যও ঔষধ রাখিয়াছেন । যিনি চন্দ্রতারকে থাকিয়া চন্দ্রতারককে নিয়মিত করিতেছেন, চন্দ্রতারক যাহার শরীর, চন্দ্রতারক যাহাকে জানে না; যিনি সূর্য্যের অভ্যন্তরে থাকিয়া সূর্য্যকে নিয়মিত করিতেছেন, সূৰ্য্য যাহার শরীর, সূৰ্য্য যাহাকে জানে না ; আর যিনি আত্মার অন্তরে থাকিয়া আত্মাতে নিয়তই ধৰ্ম্মবুদ্ধি প্রেরণ করিতেছেন, আত্মা যাহার হিরন্ময় কোম, আত্মা র্যাহাকে জানে, তিনি যদি বিশ্বচরাচরকে নিয়মিত করিতে পারিলেন ; তিনি যদি একটা কীট পর্য্যন্ত আহার প্রাপ্ত হইল কি না দেখিতে পারিলেন, তবে তিনি কি মনুষ্যের আত্মার মৰ্ম্মচ্ছেদী দাহ্যন্ত্রণ জানিতে পারিবেন না ? এবং জানিয়া কি তাহার প্রতীকারক ঔষধের ব্যবস্থা না করিয়া নিশ্চিন্ত থাকিতে পারেন ? ইহা কল্পনাতে ও স্থান পাইবার যোগ্য নহে। এই দারুণ মৰ্ম্মদাহের ঔষধ অনুতাপ—অনুতাপ— যথার্থ হৃদয়ের অনুতাপ । এই অনুতাপই ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতার নিদর্শন। আমরা २७ कछ, » छ:ण