পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প চতুর্থ খণ্ড).pdf/১৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

रणौष s४०२ সৰ্ব্বাগ্রে আত্মজ্ঞানকেই পরম ধৰ্ম্মরূপে নির্দেশ করিয়া পশ্চাৎ বর্ণাশ্রমাদি ধৰ্ম্মকে ইহার অঙ্গরূপে স্থাপন করিয়াছেন। পরে গ্রন্থের উপসংহারে আত্মজ্ঞানই যে মুখ্য ধৰ্ম্ম, ইহা লাভ করিলে যে জন্ম সফল হয় ইহা স্পষ্টাক্ষরে ব্যক্ত করিতেছেন ; "এতদ্ধি জন্মসাফল্যং ‘প্ৰাপ্যৈতং কৃতকৃত্যোহি দ্বিজোভবতি নান্যথা ।” এই আত্মজ্ঞান ব্যতীত কৃতাৰ্থ হইবার উপায় নাই, ইহাতেই জন্মের সফলতা হয়। এক্ষণে এই আত্মজ্ঞানের প্রতিবন্ধক কি এবং ইহা লাভ করিবার উপায়ই বা কি ইহা বিবৃত করা যাইতেছে। কোন মহাজন কহিয়াছেন "একঃশক্রনদ্বিতীয়োহস্তি কশ্চিৎ অজ্ঞানতুল্যঃ পুরুষস্য রাজন। যেনাবিষ্ট করুতে কার্য্যতে চ খে রাণি কৰ্ম্মাণি সে দারুণানি ।” লোকের অ জ্ঞােনই একমাত্র দ্বিতীয় কিছুই নাই, সে এই অজ্ঞানবলে ঘোর দারুণ কাৰ্য্য সকল করে ও কারিত হয়। যে দুঃখ ক্লেশের জনক সেইই শত্রু। আমরা এই অজ্ঞানাবেশে সংসারাবৰ্ত্তে পড়িয়া দুঃখ ক্লেশে অভিভূত হইতেছি এই জন্যই ইহা আমাদের শক্র । এক্ষণে এই শক্র নাশ করা চাই। ভগবান শঙ্কর কোন এক প্রবন্ধ গ্রন্থের অবতারণায় গুরুমুখে শিষ্যকে কহিতেছেন, ‘কস্ত মসি সৌম্য’ হে সৌম্য তুমি কে ? শিষ্য কহিলেন ‘ব্রাহ্মণপুত্রোছদে অন্বয়ঃ ইত্যাদি’ আমি অমুকবংশীয় ব্রাহ্মণপুত্র। ইচ্ছা, এই জন্ম মৃত্যুরূপ গ্রাহসঙ্কুল সংসার-সমুদ্র হইতে উত্তীর্ণ হই । গুরু কহিলেন, ইহৈব সৌম্য মৃতস্য তে শরীরং বয়োভিরদ্যতে মৃত্তাবং চাপদ্যতে কথং সংসারসাগরাজুদ্ধতুমিচ্ছসি নহি নদ্য। অপরে কুলে ভষ্মীভূতো নদ্যাঃ পারং তরিষ্যতি।’ হে সৌম্য তুমি মৃত হইলে পক্ষির বেহালা সাম্বংসরিক ব্রাহ্মসমাজ ND(t এইখানেই তোমার শরীরকে . ভক্ষণ করে, মৃত্তিক হইয়া যায়, অতএব তুমি এই শরীরে কিরূপে সংসারসাগর উত্তীর্ণ হইবে। যে ব্যক্তি নদীর এক পারে ভগ্নীভূত হয় সে কি নদীর পারে যাইতে পারে। তখন শিষ্য উত্তর করিলেন ‘ভিন্নোহহং শরীরাৎ’ আমি শরীর হইতে ভিন্ন । শিষ্যের এই কথায় গুরু সন্তুষ্ট হইয়া কহিলেন, সাধ্ববাদাঃ সম্যক পশ্যসি তুমি সম্যকৃদশী,ঠিক বলিয়াছ । শিষ্যমুখে এই যাহা শ্রত হওয়া গেল ‘ভিন্নোহং শরীরাৎ’ আমি শরীর হইতে স্বতন্ত্র এই টুকুই প্রকৃত তত্ত্ব। মনুষ্যের এই ইন্দ্রিয়াদি স্থল সঙ্ঘাতে অর্থাৎ শরীরে আত্মবুদ্ধি আছে। কিন্তু ইহা অজ্ঞানকৃত ভ্রান্তি । শুক্তিকায় যেরূপ রজতভান্তি, মরীচিকায় যেমন জলভ্রান্তি ইহা ও তদ্রুপ শত্ৰত 2 একটা ভ্রান্তি । কিন্তু শুক্তির স্বরূপটি বুঝিলে যেমন রজতত্ৰান্তি যায়, মরীচিকার স্বরূপট বুঝিলে যেমন জলভ্রান্তি যায় ; সেইরূপ আত্মস্বরূপটি বুঝিলে এই স্কুল সঙ্ঘাতে আত্মত্রম অপনীত হয় । সুতরাং পাওয়া গেল জ্ঞানই অজ্ঞানের নাশক । যে যাহার প্রতিকূল সেই তাহার নাশক । আলোক অন্ধকারের প্রতিকূল এই জন্য আলোক অন্ধকারের নাশক । সেইরূপ জ্ঞান অজ্ঞানের প্রতিকূল এই জন্য জ্ঞানই অজ্ঞানের নাশক। এই প্রতিকূলতা কি ? না, একটর স্বভাব প্রকাশ আর একটর স্বভাব অপ্রকাশ। প্রকাশ-স্বভাব জ্ঞান অপ্রকাশ-স্বভাব অজ্ঞানকে নাশ করিতে সমর্থ হয়। কিন্তু যাহারা জ্ঞানকে ধৰ্ম্মাঙ্গ অর্থাৎ অমুখ্য বলিয়া কৰ্ম্মকে প্রধান্য দেন তাহার। তত্ত্ব হইতে পরিভ্রষ্ট হইয়। অন্ধকার হইতে নিবিড়তর অন্ধকারে পরিভ্রমণ করিতে থাকেন । ফলত অজ্ঞান নাশের জন্য কৰ্ম্ম