পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অ গ্রহায়ণ ১৮ ১ e কাণ্টের দর্শন এবং বেদান্ত দর্শন ১৫৩ মধ্যেই তাহার অন্বেষণ-কার্য্যের গোড়াপত্তন করা বিধেয় । কেননা, সত্য সত্যই লোকে যাহাকে বাস্তবিক বলিয়া বিশ্বাস করে, ও যাহার উপর নির্ভর করিয়া অভীষ্ট পথে সত্য সত্যই অগ্রসর হয়, তাহার মধ্যে বাস্তবিক সত্য কতটুকু আছে তাহাই সৰ্ব্বাগ্রে বিবেচ্য । যাহা লইয়া আজি মধ্যে বাস্তবিক সত্য অন্বেষণ করিতে মা ওয়া না যা ওয়া পরের কথা; প্রথম উদ্যমেই তাহাতে হস্ত-ক্ষেপ করা শোভা পায় না ; কেন না তাহা করিলে উপস্থিত ছাড়িয়া অনুপস্থিতে আশা করা হয় । এইরূপ বিবেচনার কান্ট সৰ্ব্ব প্রথমে বিজ্ঞানের মধ্যে বাস্তবিক সত্যের মূলান্বেষণে প্রবৃত্ত হইলেন । তিনি প্রথমেই ইন্দ্রিয়ের অবভাস এবং জ্ঞানের সত্য এই দুয়ের মধ্যে—(বৈদন্তিক ভাষায়) অবিদ্যা এবং বিদ্যা এই দুয়ের মধ্যে—প্ৰভেদ নিরূপণ করিলেন । দেশ কালে প্রতিভাত হয়—মনুম্যের ও সেইরূপ ; কিন্তু মনুষ্য দেশকালের আবিভাব-মাত্রে সস্তুষ্ট না থাকিয় তাহার মধ্য হইতে সত্য বাহির করিবার চেষ্টা করে ; বরাহ অবতারের ন্যায় অবিদ্যার সাগর-গৰ্ব । হইতে বিদ্যা উদ্ধার করিবার চেষ্টা করে । বিদ্যার সত্য সম্বন্ধে কাণ্টের মন্তব্য কথা এই যে, যেমন তেমন সত্য হইলে চলিবে । না, তাহ সুনিশ্চিত হওয়া চাই – তবেই তাহাকে বাস্তবিক সত্য বলিব । একট। জন্তু যদি তোমার বুদ্ধিতে সপ বলিয়া প্রতীয়মান হয়, আমার বুদ্ধিতে মৎস্য বলিয়া প্রতীয়মান হয়, আর এক জনের বুদ্ধিতে কীট বলিয়া প্রতীয়মান হয়, তবে বাস্তবিক তাহা যে কি—তাহা বলিতে পারা এক কথায়—সৰ্ব্ববাদি সম্মত কথায়—অবশ্যম্ভাবী বা নির্বিকল্প । এটা একটা মোটামুটি রকমের সত্য-নিরূ পশু- , দিগের ইন্দ্রিয়-সমক্ষে যেমন শব্দ স্পশাদি । স্বকঠিন ; কিন্তু যাহা সকলের বুদ্ধিতেই সপ বলিয়া প্রতীয়মান হয়—তাহ বাস্ত বিকই সর্প। তেমনি আবার, মাঠের মধ্যে যদি অামি জলের মতো একটা আবির্ভাব দেখিযা বলি যে, উহা জল হইলেও হইতে পারে, মরীচিকা হইলেও হইতে পারে ; তবে,কি যে বাস্তবিক—তাহার ঠিকানা হয় পর্য্যন্ত তর্ক বিতর্ক চলিতেছে—তাহ । না ; কিন্তু যদি আমি তাকাট্য প্রমাণ দ্বারা বুঝিতে পারি সে উহ জল ভিন্ন আর কিছুই হইতে পারে না, তবে তাহা যে বাস্তবিকই জল, সে বিষয়ে তামার কোন সংশয় থাকে না। হার কালেও—তাছাকেই আমরা বলি বা- . বশবর্তী হইয়া । এইরূপ লৌকিক ব্যব স্তবিক সত্য যাহা সকলের নিকটেই সত্য, বা সৰ্ব্বভৌমিক ; ও যাহা ন হইলেই নয়, এক কিন্তু পণ | বাস্তবিক সত্য নিরূপণের দার্শনিক পদ্ধতি সূক্ষোর পরাকাষ্ঠী । প্রথম দৃষ্টিতে ঐন্দ্রিয়ক অবভাসের মধ্যে—অবিদ্যার মধ্যে—সত্যাসত্য স্থান পাইতে পারে না ; কিন্তু তাহার মধ্যে হইতে ও কান্ট দুইটি অবশ্যম্ভাবী সত্য খু জিয়া বাহির করিয়াছেন—কি ? না দেশকালে তাবস্থিতি। ঐন্দ্রিয়ক অবভাসের মধ্যে হইতে রূপ রসাদি সমস্তকেই ভাবনা হইতে বহিস্কৃত করিয়া দেওয়া যাইতে পারে—কিন্তু তাহা আকাশের যে প্রদেশটিকে এবং কালের যে সময়টিকে অধিকার করিয়া বৰ্ত্তমান আছে তাহা ভাবনা হইতে কিছুতেই বহিষ্কার করিয়া দেওয়! যাইতে পারে না। ঐন্দ্রিয়ক অবভাসের পক্ষে দেশকালে অবস্থিতি নিতান্তই অবশ্যম্ভাবী । , দেশ-কাল-রূপী অবিদ্যা-ক্ষেত্রে আমরা আমাদের জ্ঞামকে খাটাইয়। সেখান হই- '