পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$8e তত্ত্ববোধিনী পত্রিক তিন নৌকায় পা দিয়া অবস্থিতি করে— তাহাকে কিরূপে স্বাধীন বলা যাইবে ? সত্ত্ব রজ স্তমোগুণ তিনই পরস্পরকে অ- | পেক্ষা করে এবং তাহাদের সাম্যাবস্থা তিনকেই অপেক্ষা করে—সমস্তই অাপেক্ষিক কাণ্ড ! প্রকৃতি জগৎ চালাইতেছে বটে কিন্তু প্রকৃতিকে চালায় কে ? প্রকৃতি আপেক্ষিক-সুতরাং আপনাকে আপনি চালাইতে অসমর্থ ; আপনাকে আপনি চালাইবার ভাব কেবল জ্ঞানাত্মক শক্তিতেই সম্ভবে—পূর্ণ জ্ঞানাত্মক শক্তিতে পূর্ণমাত্রায় সম্ভবে—মনুষ্যের সংযম শ | | ক্তিতে কতক পরিমাণে সম্ভবে । মনুষের । ংযম-শক্তি ঈশ্বরকে অবলম্বন করিয়া (সংস্কার-শক্তি যেমন পরিমিত বিষয়কে । অবলম্বন করিয়া স্বকার্য্যে প্রবৃত্ত হয়, সংযম-শক্তি তেমনি ঈশ্বরকে অবলম্বন করিয়া) ঈশ্বর হইতে ভাব লইয়া—প্রকৃতিকে ক্রমশই নুতন করিয়া গড়িয়া তুলিতে থাকে। মনুষ্যের সংযম শক্তির হস্তে পড়িয়া প্রকৃতি ক্রমশ পরমাত্মার দর্পণ-রূপে (স্বচ্ছ হইতে স্বচ্ছতর দর্পণ-রূপে) পরিণত হইতে থাকে। পটের এপিট না থাকিলে যেমন ছবি অঁাকা চলে না, তেমনি মূলে প্রকৃতি না থাকিলে জগতের কোনো কার্য্যই চলে না, আবার, ওপিট না থাকিলে যেমন এপিট থাকে না, তেমনি স্বয়ম্ভ ঈশ্বর না থাকিলে পরাধীন প্রকৃতি থাকিতে পারে না । তিনের মধ্যে কিরূপ ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ পাঠক তাহ। আপনিই মনোমধ্যে তোলাপাড়া করিয়া দেখিবেন—বর্তমান প্রতিবাদকে আর অধিক দূর টানিয়া লইয়া যাওয়া অামার শ্রেয় বিবেচনা হয় না । পাঠক যদি এখানে ওখানে আমার বাক্যের ছল ধরিতে চেষ্টা করেন, তবে তাহার জন্য বর্তমান প্রস্তাবে ছিদ্রের অপ্র যায়, তাহাও নহে । তুল নাই ; কিন্তু যদি সযত্নে সমস্তের মৰ্ম্মের ভিতর প্রবেশ করিতে চেষ্টা করেন তবে তিনি তৎসম্বন্ধে ভাল মন্দ যাহা কিছু স্থির করিবেন, তাহাই আমার শিরোধাৰ্য্য —তাহার উপর আর কোনও প্রকার বাদানুবাদ চালাইতে এক্ষণে আমার স্পুহাও নাই অবসরও নাই । [ ঐদ্ধি ] ব্ৰহ্মপূজা । পূৰ্ব্ব প্রকাশিতের পর। আত্মস্থ হইয়া ব্ৰহ্মকে দর্শন করিলেই যে ধৰ্ম্মজীবনের চরমাবস্থায় উন্নত হওয়৷ ইহার পরও আছে । তাহা ব্ৰহ্ম-লাভের অবস্থা। কিন্তু ইহা জানা একান্ত কৰ্ত্তব্য যে, একবার মাত্র সত্য-স্বরূপ ঈশ্বরকে সাক্ষাৎ করিলে

  • ভিদ্যতে হৃদয়গ্রস্থিশিম্ভুদ্যন্তে সৰ্ব্বসংশয়াঃ ।”

হৃদয়ের গ্রন্থি সকল ভগ্ন হইয়া যায় এবং সকল প্রকার সংশয় ছিন্ন হইয়া যায় । মায়া, মোহ, অসরলতা প্রভৃতি গ্রন্থি দ্বারা হৃদয় আবদ্ধ। যতদিন এই গ্রন্থি ছিন্ন না হইবে, ততদিন কিছুতেই আত্মা নিৰ্ম্মল শান্তির অধিকারী হইবে না। আর ব্রহ্মদর্শন ভিন্ন ও হৃদয়-গ্রন্থি ছিন্ন হয় না । সংশয় ধৰ্ম্ম-জীবনের মহা শক্র । ঈশ্বরকে প্রত্যক্ষ না করিলে হৃদয় জ সংশয় চিরদিনই হৃদয়ে থাকিবে । আর ব্রহ্মদর্শন হইবা মাত্র সেই সংশয়ও হৃদয় হইতে পলায়ন করিবে । ব্ৰহ্মদর্শন করিয়া চিত্ত আসক্তিরহিত ও সংশয়রহিত হইলে সেই চিত্তক্ষেত্র ভগবানের ক্রীড়াভূমি হইয়া থাকে। তখনি সাধক আত্ম-ক্রীড় ও আত্মরতি হইয়া ব্ৰহ্ম লাভ করিতে সক্ষম হন । । একটা বস্তু আমার লাভ হইবে, তাহার প্রকৃত অর্থ এই যে, সেই বস্তুতে আমার