পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

না আমাদের প্রতি-জনের নিজের স্বাধীন। চেষ্টা ; ধাত্রী কে ? না আমাদের দেশের সামাজিক এবং গার্হস্থ্য পৈতৃক সংস্কার । মাতা যেমন বালকের সঙ্গে সঙ্গে ধাত্রীকে প্রেরণ করেন-ঈশ্বর তেমনি সাধকের স্বাধীন চেষ্টার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষ-পরম্পরাগত পৈতৃক ংস্কার সংযুক্ত করিয়া রাখিয়াছেন । স্বাধীন চেষ্টা-টি জ্ঞান-মুলক এবং পৈতৃক সংস্কার-টি প্রাণ-মূলক, ইহা বলা বাহুল্য। স্বাধীন उादद कार्षी कद्र याव्र किछू नग्न-दूशिग्न। সুঝিয়া, কার্যা কর—সচেতন-ভাবে কার্য্য করা—জ্ঞানের সহিত কাৰ্য্য করা। প্রাণের সহিত কাৰ্য্য করা কি ? না পুরুষপরম্পরাগত পৈতৃক সংস্কার যাহা আমাদের হৃদয়ের অভ্যন্তরে বদ্ধমুল রহিয়াছে এবং বাহির হইতে । উপলক্ষ উপস্থিত হইলেই যাহা ভিতর হইতে । উথলিয় উঠে, সেই চিরাগত পৈতৃক সংস্কার অনুসারে কার্য্য করা’র নামই প্রাণের সহিত । কার্য করা। পৈতৃক সংস্কারকে উচ্ছেদ করা কানোমতেই বিধেয় নহে; বিধেয় কি ? না স্বাধীন চেষ্টা দ্বারা জ্ঞানের অনুগত হইয়। কু ইতে স্ব বাছিয়া লওয়া। ভারতবর্ষের মৰ্ম্মগত অস্থিগত মজ্জাগত একটি স্বমঙ্গল ভাবসূত্র যাহ। পুরাতন কাল হইতে একাল পর্যন্ত Iান দেশের নানা আচার ব্যবহারে মাটিiাপ পড়িয়াও অখণ্ডিত ভাবে চলিয়া আসিIাছে—সেই প্রীতি-ভক্তি-স্নেহের কুসুমবকাশ—সেই পুণ্যের প্রশান্ত তেজস্বিতা— সই অমায়িক সৰ্ব্বলোক-হিতৈষিতা—যাহা অন্তঃশিলা সরস্বতী নদীর ন্যায় এখনো পর্যন্ত আমাদের দেশের অস্থি মজ্জার অভ্যন্তরে অদৃশ্য ভাবে প্রবাহিত হইতেছে, তাহাই আমাদের দেশের প্রাণ—তাহাই আমাদের দশের পৈতৃক সংস্কার। দেশের মৰ্ম্ম-নিহিত প্রাণকে-পৈতৃক সংস্কারকে উচ্ছেদ করিলে, যি শাখায় আমরা উপবিষ্ট্র সেই শাখার २९ कञ, १ छात्र মুলোচ্ছেদ করা হয় ; কখনই তাহা বিধেয় নহে । বিধেয় কি ? না প্রাণের অন্ধ স্ফৰ্ত্তিকে —পৈতৃক সংস্কারের মূঢ় উত্তেজনাকে— স্বাধীন চেষ্টা দ্বারা জ্ঞানের নিয়মে নিয়মিত করা । স্ফৰ্ত্তিকে স্বনিয়মে নিয়মিত করা স্বতন্ত্র এবং উচ্ছেদ করা স্বতন্ত্র। অশ্বকে রাস-রজজু দ্বারা নিয়মিত করিলে তাহাকে মারিয়া ফেলা হয় না—বরং তাহা না করিলে সারথী অচিরে বিপদগ্ৰস্ত হয় । আমাদের দেশের সেই যে মৰ্ম্মনিহিত প্রাণ, কিনা পুরুষপরম্পরাগত পৈতৃক সংস্কার, তাহ আমাদের সমস্ত কর্তব্য-কার্যোর ঈশ্বর-নির্দিষ্ট ধাত্রী এবং এই ধাত্রীর হাত ধরিয়াই আমাদের স্বাধীন চেষ্টা নবোন্মেষিত জ্ঞানের আলোকে কর্তব্য-পথে অগ্রসর হয়। এই ধাত্রীর হাত ছাড়িয়া দিলে আমাদের কিরূপ দুৰ্গতি হয় তাহার একটা দৃষ্ট্রান্ত দিতেছি । মনে কর একটি নবপ্রসূত বালককে জন-শূন্য অরণ্যের মধ্যে ছাড়িয়া দিয়া আসা গেল । আর, মনে কর একটা বন-মানুষী তাছাকে স্বীয় স্তন্য দুগ্ধে লালন পালন করিয়া তাহাকে বিধিমত হৃষ্ট পুষ্ট্র এবং বলিষ্ঠ যুবা করিয়া দাড় করাইল । ক্রমে সেই মনুষ্য-টি তাহার অসাধারণ ধীশক্তির প্রভাবে বনমানুষদিগের দলপতি হইল ; ইতি মধ্যে একজন মস্তিষ্কতত্ত্ববিৎ পণ্ডিত তাহার মাথা পরীক্ষা করিয়া দেখিল যে, তাহার ধীশক্তি মেধা ভক্তি শ্রদ্ধা ধৰ্ম্মনিষ্ঠ অসাধারণ তেজস্বী ; এরূপ সত্ত্বেও আমাদের দেশের একজন কৃষি-বালক যাহা জানে তাহাও সে জানে না, ও তাহার সমস্ত আচার ব্যবহার বন-মানুষের মতো । পুরু ষপরম্পরাগত পৈতৃক সংস্কার হইতে—ঈশ্ব রনির্দিষ্ট ধাত্রী হইতে—বিচ্ছিন্ন হইলে, স্বাধীন-চেষ্টার দশা এইরূপই হয়। ঘোড়া বা গাধা ভূমিষ্ঠ হইবা-মাত্রই ঘোড়া বা গাধা হয়, কিন্তু মনুষাকে ধাত্রী মানুষ না করিলে মনুষ্য