পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

¢ষষ্টিতম সাম্বৎসরিক ব্রাহ্মসমাজ २० . , ۵ د ۵۱۶ wteFT ٠ একটা বাষ্পীর নৌকা চলিয়া যাইতেছে ও । ജങ്ങ് = সঙ্গত ন্যায়ের নিয়মই নিয়ম—অজ্ঞান-সঙ্গত অন্যায়ের নিয়ম নিয়মই নহে-তাহা অনিয়মেরই নামান্তর । একই অদ্বিতীয় জ্ঞানসঙ্গত মূল নিয়মে সমস্ত জগতের আদ্যোপাত্ত নিয়মিত হইতেছে—সে নিয়ম এই যে, যেমন ঘাত তেমনি প্রতিঘাত । জ্ঞান-সঙ্গত নিয়মের মূলে জ্ঞান নাই—আর সূর্যালোকের মূলে সূৰ্য্য নাই—দুইই অর্থশূন্য ওলাপ বাক্য । অজ্ঞান-সঙ্গত নিয়ম বলিলে অনিয়ম | ছাড়া আর কিছুই বুঝায় না ; সুতরাং নিয়ম বলতে জ্ঞান-সঙ্গত নিয়মই বুঝায় ; অতএব সমস্ত জগতের মুলে যদি একই অদ্বিতীয় কোনো প্রকার মূল নিয়ম থাকে—তবে সে নিয়ম অবশ্যই জ্ঞান-সঙ্গত, যুক্তি-সঙ্গত, বিচার-সঙ্গত, তাহাতে আর তিল-মাত্রও ংশয় নাই ; আর সেই একই অদ্বিতীয় জ্ঞান-সঙ্গত নিয়মের মূলে একই অদ্বিতীয় জ্ঞান-স্বরূপ পরমাত্ম নিশ্চয়ই বর্তমান । একই সূৰ্য্যালোক যেমন সমস্ত পৃথিবীর প্রাণ, তেমনি একই অদ্বিতীয় মুল নিয়ম সমস্ত জগতের প্রাণ ; এবং একই অদ্বিতীয় সূর্য । যেমন সমস্ত পুথিবীর চক্ষু, তেমনি একই অদ্বিতীয় পরমাত্মা সমস্ত জগতের চক্ষু | সমস্ত জগতের একই অদ্বিতীয় মূল নিয়ম এই যে, যেমন ক্রিয় তেমনি প্রতিক্রিয়া — যেমন ঘাত তেমনি ও তিঘাত । একজন অনভিজ্ঞ লোক মনে করিতে পারে যে, ঐ যে জ্ঞান-সঙ্গত মুল নিয়ম উহা জড়-জগতেরই নিয়ম—জ্ঞান-জগতে উহা খাটে না ; ইহঁাদের মনের ভাব এই যে, অনিয়ম এবং স্বেচ্ছাচারই জ্ঞান-জগতের একমাত্র নিয়ম | ই হারা আপনাদের মনোগত ভাব জগতের মুলে আরোপ করিয়া জগতের এক অদ্বিতীয় চক্ষুকে অন্ধ মনে করেন—এবং এক অদ্বিতীয় হস্তকে বলহীন মনে করেন । মনে কর, মাঝগঙ্গা দিয়া ধূম-পতাকা উড়াইয়া | একজন নূতন আনাড়ি কিনারায় কিনারায় ডিঙি চালাইতেছে ; নিকটস্থ আর আর নৌকার মাঝিরা আগমিষ্যৎ তরঙ্গের ধাক্কা সামলাইবার জন্য পূৰ্ব্ব হইতেই সতর্ক হইতেছে, কিন্তু আনাড়ি-টা মনে করিতেছে | যে, এত সাবধানতা কিসের জন্য ? মাঝ গঙ্গার তরঙ্গ মাঝ-গঙ্গাতেই উঠিতেছে— । মাঝ-গঙ্গাতেই মিলাইয়। যাইতেছে; কিনারার সঙ্গে তাহার কি সম্পর্ক ? এই ভাবিয়া সে যখন অন্যান্য মাঝিদিগের প্রতি কটাক্ষ করিয়। মনের সুখে হাস্য করিতেছে — তখন অকস্মাৎ প্রকাও একটা তরঙ্গ ছু ছুঃ শব্দে আসিয়া তাহার ক্ষুদ্র ডিঙিখানি, জলমগ্ন করিয়া দিল । এ যেমন দেখা গেল তেমনি— যাহারা মনে করেন যে, “ঘাত প্রতিঘাতের নিয়ম জড়-জগতেরই নিয়ম—জড় জগৎই বুকু —জ্ঞান-জগতের সহিত তাহার কি সম্পর্ক ? জ্ঞান-জগতে যাহার যাহা ইচ্ছা সে তাহা করিতে পারে—জ্ঞান-জগতে ফলাফলের কোনো নিয়ম নাই,” তাহারদেরও পরিণামে ঐরূপ দশা হয় । ব্রাহ্মধৰ্ম্মে তাই লিখিত আছে অধৰ্ম্মেনৈধতে তাবৎ ততো ভদ্রানি পশ্যতি, ততঃ সপত্নান জয়তি সমূলস্তু বিনশ্যতি । লোকে অধৰ্ম্ম দ্বারা সমস্ত হস্তগত করে, পরে চতুর্দিকে মঙ্গল দর্শন করে, পরে শত্রুদিগের উপর জয়লাভ করে, – কিন্তু সমুলে বিনাশ প্রাপ্ত হয় । যখন সে, শক্র জয় করিতেছে, তখন হয় তো সমস্ত জগৎ তাহার শ্ৰীবৃদ্ধি অবলোকন করিতেছে—যখন বিনাশ প্রাপ্ত হইতেছে তখন কেহই হয় তো তাহার দুর্দশা দেখিতেছে না ; কিন্তু তাহাতে কিছুই আইসে যায় না; যতক্ষণ সে অধৰ্ম্মকে স্বীয় বক্ষে পোষণ করিতেছে ততক্ষণই তাহার গতি বিনাশের দিকে হইতেছে এবং যতক্ষণ সে