পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ठा यांछ s४ >० বৈদাস্তিক-ব্রহ্মজ্ঞান 86. নহে। অবাধিত—যাহার বাধ হয় না, অর্থাৎ পরীক্ষা কালে যাহার অন্যথা হয় না। সমুদয় কথার নিকর্ষ বা নির্গলিতাৰ্থ এই যে, যে জ্ঞানের বা যে মনোবৃত্তির (বস্তু ছবির) বিষয় বা বস্তু জ্ঞানোভরকালেও থাকে, পরীক্ষা করিলেও অন্যথা হয় না, তিরোহিত হয় না, সেই জ্ঞান বা সেই মনোবৃত্তি প্রমা-শব্দের বাচ্য । দূরত্বাদি দোষ নাই, আন্তরিক ইন্দ্রিয়-বৈকল্যাদি দোষ নাই, এমন-অবস্থাতেই ইন্দ্রিয়সম্পর্ক প্রভাবে যদ্রপ বস্তু ঠিক তদ্রপ মনোবৃত্তি (ছবি) জন্মিয়া থাকে, অন্যথা হইলে অন্যরূপ হয়, অর্থাৎ প্রমা হয় না, ভ্রমই হয় । জ্ঞানগোচরিত বস্তুর স্বরূপ ঠিক থাকিলেই, অন্যথা না হইলেই অর্থাৎ | বাহ্যিক । | জ্ঞান দোষাভাব সহকারে উৎপন্ন হয়, সেই জ্ঞানেরই বিষয় অবাধিত ও অব্যভিচরিত হয় । অন্যথা বা অনরোপ হয় মা ! বাধিত শব্দের পরিবর্তে মিথ্য শব্দের ব্যবহার করিতে ও পার ; বাধিত—মিথ্যা । অবাধিত—সত্য । অতএব যে জ্ঞান অবধিত পদার্থ অর্থাৎ সত্য বস্তু অবগাহন করে, সেই জ্ঞানই প্রমা জ্ঞান | ইহাও মনে রাখিতে হইবেক, এ সত্য ব্যবহারিক সত্য। স্মৃতিজ্ঞান প্রম ধটে, কিন্তু ইহার বিষয় পরীক্ষায় টিকিলেই তাহ অবাধিত বলিয়া । গণ্য । কখন কখন রজু-চক্ষুঃ-সংযোগের পর রজ্জ্বজ্ঞান না হইয়া সৰ্প জ্ঞান হয়, সে জ্ঞানের সে সপ পরীক্ষায় টিকে না, অন্যথা হয়, অর্থাৎ ইহা সৰ্প নহে, এরূপ পুনঃপ্রতীতি হয়, সুতরাং সে সপ বাধিত । এরূপ অন্যথা জ্ঞান, বা একে আর জ্ঞান, কোন রূপ দোষ থাকিলেই হয়, দোষ না থাকিলে হয় না । পেচকগণ স্ফীতালোক সূৰ্য্যমণ্ডলে অন্ধকার অনুভব করে, তাহা তাহদের নেত্রদোষ । কেহ কেহ রক্ত বর্ণকে কৃষ্ণ বর্ণ ও শ্বেত বর্ণকে পীত বর্ণ মনে করে, সে সমস্তই তাহাদের চক্ষুর দোষ । আমরা সকলেই বহু যোজন বিস্তৃত সূৰ্য্যকে হস্তপ্রমাণ দেখি, সুতরাং তাহা আমাদের দোষ নহে, বাহ্যিক দূরত্ব-দোষই আমাদিগকে উহাকে ঐরূপে প্রদর্শন করায় । অতএব বাহ্যিক বা আন্তরিক কোন প্রকার দোষ (প্রতিবন্ধক) বিদ্যমান থাকিলে প্রমোৎপত্তি হয় না, ইহা স্থির সিদ্ধান্ত । যে সে সময়ে উপস্থিত বা বিদ্যমান থাকে না । চিত্তে পূৰ্ব্বানুভূত জ্ঞানের সংস্কার থাকে, উদ্বোধক উপস্থিত হইলে, সেই সংস্কারই তদাকারে (তদ্বস্তুর আকারে) অভিব্যক্ত হয়। কাযেই এই জ্ঞান বিদ্যমান-বিষয়-নিরপেক্ষ । বিষয় বিদ্যমান থাকে না, কেবল মাত্র পূর্ববানুভব-জনিত-সংস্কার-বলে উদিত হয় বলিয়া, স্মৃতিজ্ঞানটা স্বপ্নসদৃশ অম্পষ্ট। ভবের সহিত স্মৃতির এই মাত্র প্রভেদ দেখিয়া যাহারা স্মৃতি জ্ঞানকে পৃথক শ্রেণী করিতে ইচ্ছা করিবেন, তাহারা অনধিগত বা অনলুভূত এই শব্দটকে বিষয়বিশেষণ { দিবেন। অর্থাৎ তানধিগত (অননুভূত) ও অবাধিত বস্তু অবগাহী জ্ঞানই প্রমা, এইরূপ বলিবেন । যে বস্তু অননুভূত, পূর্বে অনুভূত হয় নাই অথচ অবাধিত অর্থাৎ মিথ্যা নহে, এমন বস্তু যে-জ্ঞানের বিষয়, সেই জ্ঞানই প্রম । ইহাই প্রমা লক্ষণ, এই লক্ষণই মনে রাখিবেন । যখন কোন ধারাবাহী জ্ঞান জন্মে তখনও তদন্তগত দ্বিতীয়াদি জ্ঞানের বিষয় (আলম্বন বস্তু) নিম্নলিখিত প্রকারে অনধিগত বলিয়া গণ্য, তদনুসারে, স্মৃতিঘটিত প্রমাঙ্গানের লক্ষণও তাদৃশস্থলে অব্যাপ্ত নহে। অর্থাৎ ধারাবাহী জ্ঞানের দ্বিতীয়াদি জ্ঞানে এ প্রমা লক্ষণ বজায় থাকে।