পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/১৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৬
তিতাস একটি নদীর নাম

 সুবলার বউ মনে মনে হাসে।

 ‘তুমি তারে সন্দে কর কেনে?’

 ‘সন্দে করি কেনে? আমার অন্তরে বড় জ্বালা দিয়া রাখ্‌ছে। এমন জ্বালা, যা কইবার উপায় নাই, দেখাইবার সাধ্য নাই।’

 ‘বুঝলাম।’

 বাপের ঘরে এক নাল সূতা কাটিতে হয় নাই। শিখিবারও সুযোগ পায় নাই কোনোদিন। দশ শের সূতা লইয়া সে অথৈ জলে পড়িল।

 দুপুরের পরে সুবলার বউ কতকগুলি সূতা কাটার হাতিয়ার লইয়া হাজির হইল। সেগুলি মাটিতে নামাইয়া বলিল, ‘এই নেও বড় টাকু, মোটা সূতার লাগি, এই নেও ছোট টাকু, চিকন সূতার। আর এই একখানা পিঁড়ি দিলাম, ঘাটে গিয়া শণের লাছি এর উপরে আছড়াইয়া ধুইয়া আনবা। তার পর রইদে শুখাইবা। রাইতে আইয়া সব শিখাইয়া দিমু।’

 অনন্তর মা’র প্রথম চেষ্টার ফল দেখিয়া সুবলার বউ হাসিয়া খুন। বলে, ‘আমার দিদি কাটুনি সূতা কাটতে পারে, একনাল সূতায় হস্তী বান্ধা পড়ে।’

 দ্বিতীয় দিনের ফল দেখিয়া খুশি হইয়া বলিল, ‘এইবার কাট চিকন সূতা ছোট টাকু লইয়া।’

 সাত দিনে চৌদ্দ ‘নিড়ি’ সূতা হইল। সাতটা মোটা সূতার, সাতটা সরু সূতার। মোটা এক টাকা ও সরু দুই