পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/৩২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তিতাস একটি নদীর নাম
৩১১

বসিয়াছিল। একটি ছোট মেয়ে তেমনি কয়েক ছড়া মালা বানাইয়া কাহার গলায় পরাইবে ভাবিতেছিল। অনন্তর দিকে চোখ পড়াতে তাহারই গলায় পরাইয়া দিল। অনন্ত চট করিয়া খুলিয়া আবার মেয়েটির খোঁপায় জড়াইয়া থুইল। চক্ষুর নিমিষে এই কাণ্ডটি ঘটিয়া গেল। মেয়েটির দিকে চাহিলে প্রথমেই চোখ পড়িবে এই খোঁপার উপর। ছোট মেয়ের তুলনায় অনেক বড় সে-খোঁপা। সাত মাথার চুল এক মাথায় করিয়া যেন মা বাঁধিয়া দিয়াছে।

 খুশি হইয়া মেয়েটি জিজ্ঞাসা করিল, ‘কোনোদিন ত দেখি নাই তোমারে; তোমার নাম কি?’

 ‘অনন্ত। আমার নাম অনন্ত।’

 ‘দূর, তা কেম্‌নে হয়! ঠিক কইরা কও, তোমার নাম কি?’

 ‘ঠিক কথাই কই। আমার নাম অনন্ত।’

 তবে আমার মত তোমার খোঁপা নাই কেনে; আমার মত তুমি এইরকম কইরা শাড়ি পর না কেনে? তোমার নাক বিন্ধা নাই কেনে, কান বিন্ধাইয়া কাঠি দেয় নাই কেনে; গোধানি কই, হাতের চুড়ি কই তোমার?’

 ‘আরে, আমি যে পুরুষ। তুমি ত মাইয়া।’

 ‘তবে তোমার নাম অনন্ত না।’

 ‘না! কেনে?’

 ‘অনন্ত যে আমার নাম। তোমার এই নাম হইতে পারে না?’