কার। সকলেরই রঙ্ কালো। তবে হালকা রঙ্চটা কালো নয়, তেলতেলে পাথরের সুগঠিত মূর্তির মত কালো। কিশোরদের গাঁয়ের লোকও বেশির ভাগই কালো। কিন্তু মাঝে মাঝে পরিষ্কার লোকও আছে। নারীরাও অনেকেই কালো আবার অনেকেরই রঙ্ ফরসা। বাসন্তীর রঙ্ তো রীতিমত ব্রাহ্মণ-পণ্ডিতের মেয়ের মত। কিন্তু এ গাঁয়ের নারী-পুরুষ সকলেই কালো।
আর একটা ভাল জিনিস কিশোরের চোখে পড়িয়াছে। এখানে ঘরেঘরে জাল যেমন আছে তেমনি হালও আছে। প্রত্যেক বাড়িতেই একপাশে জালের সরঞ্জাম, আর এক পাশে হালের সরঞ্জাম। একদিকে আছে গাবের মট্কি, জালের পুটলি, দড়াদড়ি, ঝুড়ি ডোলা আরেকদিকে লাঙ্গল-জোয়াল, কাঁচি নিড়ানি, মই। অযত্নরক্ষিত ঘর দুখানার একখানাতে যেমন দুই এক পুরুষের পুরানো জালের পুটলি পুরাতন পঞ্জিকার মত জমিয়া উঠিয়াছে, তেমনি অন্যখানাতে বিভিন্ন বয়সের গরুবাছুরের ঘাসে ফেনে গোবরে থম্থম্ করিতেছে। ইহাদের জীবনদেবতা আকাশের আদমসুরতের মত দুই দিকে আঙ্গুল বাড়াইয়া রাখিয়াছে। একদিকে নদী মাছে ভরভর আর আরেকদিকে মাঠ ফসলে হাসি-হাসি। কোনোদিন কোন অদৃশ্য শয়তান যদি ইহাদের জালের গিঁটগুলি খুলিয়া দেয়, নৌকার লোহার বাঁধগুলি আলগা করিয়া ফেলে, আর নদীর জল চুমুক দিয়া শুষিয়া নেয়, ইহারা মরিবে না। ক্ষেতে শস্য ফলাইবে। এক হাতে ক্ষেতে শস্য ফলাইবে আরেক