পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তিতাস একটি নদীর নাম
৭১

ছয় মাসের স্থায়ীত্ব নিয়া বড় বড় চালাঘর উঠিতে থাকে। একেকটা চালা একদৌড়ের পথ লম্বা।

 কারোর সঙ্গে কারোর কোনোকালে দেখাসাক্ষাৎ ছিল না। এখানে আসিয়া সকলে এক সংসারের লোক হইয়া গিয়াছে। এক সঙ্গে খায়, থাকে, কাজ করে। মহোৎসবের রান্নার মত স্তূপাকারে ভাত তরকারি রান্না হয়। ঢালা পংক্তিতে বসিয়া খায়। মুখ ধুইয়া আবার কাজে বসে।

 কি অত কাজ? না, মেয়ের বটি মেলিয়া কাতারে কাতারে বসিয়া যায়। পুরুষেরা মাছের ঝুড়ি ধরাধরি করিয়া আনিয়া তাহাদের পাশে স্তূপ করিতে থাকে। মেয়েদের হাত চলে ঠিক কলের মত। এতবড় মাছটাকে পলকে ঘুরাইয়া পেটে পিঠে গলায় তিন পোচ দিয়া ঘাড়ের উপর দিয়া ছুঁড়িয়া মারে, সে-মাছ যথাস্থানে জড় হয়। আরেক দল পুরুষ সেখান হইতে নিয়া ডাঙ্গিতে তোলে শুকাইবার জন্য। দিনের পর দিন এই ভাবে তিন মাস কাজ চলে। ছয় মাসের প্রবাস সারিয়া তারা যার যার দেশে পাড়ি জমায়। ইহাকে বলে ‘খলা-বাওয়া।’


 তারা ঝুড়িভরা আবির আনিয়াছে! গামলাভরা রঙ্ গুলিয়াছে। চৌকোণা চার-থাকের একটা মাটির সিঁড়ির উপর দুই পাশে পোঁতা দুইখানা বাঁশের সঙ্গে দড়ি বাঁধিয়া