পাতা:তীর্থ-সলিল - সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত (১৯০৮).pdf/১৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তীর্থ-সলিল

বিশাল এক জীয়ন্তের নদে যায় রে ভেসে পদে পদে
কত রাজা, সৈন্য কত,—কতই জাতি ঘোর হুতাশে!
স্তব্ধ হ'লাম শব্দ শুনে,—জয়ধ্বনি সেইটে ভাই!
দেশ বিদেশে একজনের নাম চল্লো ধেয়ে শুনতে পাই;
ওগো মস্ত লোকেরা সব! তোমাদেরও হয় পরাভব?
‘উচ্চ আশার নাই প্রয়োজন' ভগবানের হুকুম তাই!
যা’ হ’ক্ তা’ হ’ক সবার আগে তোমাদেরি ধন্য বলি,
ওগো মোদের কর্ম্মপটু রাজ্য-তরীর নাবিক গুলি!
পরস্পরের শান্তি-সুখে পরস্পরে দিচ্ছ ফুঁকে,
ভগ্নতরীর একটা দিকেই পড়্‌ছ ঝুঁকে সবাই মিলি’!
কূলে থেকে বল্‌ছি আমি ‘ভ্যালা রে মোর ভাই রে,
যা’ ক’রেছ খুব করেছ,—এমনি ধারাই চাই যে!’
তার পরে ফের রৌদ্রে বসে রোদ্‌ পোহাতে থাক্‌ব ক’সে,
‘উচ্চ আশার নাই প্রয়োজন' ঈশ্বরেরও হুকুম তাই!
ঘৃতে আর চন্দনের কাঠে পুড়বে তুমি বুঝছি বেশ,
সুঁদ্‌রী কাঠের চিতার শুয়ে আমি হ’ব ভস্মশেষ;
তোমার শেষ-পালঙ্ক ধ’রে, আমীর উজীর চল্‌বে ঘিরে,
আমি যাব বাঁশের দোলায় নিয়ে আমার কাঙাল-বেশ।
মরণ কিন্তু মরণই—ঐ তোমারও যা আমারও তাই;
তোমার মশাল জ্বল্‌লো না আর আমার প্রদীপ নিব্‌ল রে ভাই।
তফাৎটা বা’ দেখ্‌ছি খাটে, চন্দনে আর সুঁদ্‌রী কাঠে;
‘উচ্চ আশার নাই প্রয়োজন' ভগবানের হুকুম তাই!

-
১৩৩