Σ Σ \9 তৃণাঙ্কর কতটুকু জানে ? ক্রোকাস, মাৰ্গারেটু, কি কর্ণফ্লাওয়ার এখানে ফোটে না বটে-কিন্তু যেদিকে চোখ তাকাই, সেদিকেই এই যে প্ৰস্ফুট নীলাভ শুভ্ৰবর্ণের ধুরফুলের অপূর্ব সমাবেশ-এর সৌন্দৰ্য্য কম কিসে ? কি প্ৰাচুৰ্য্য এই ফুলের-ঝোপের নীচেও যে ফুল-সেখান থেকে থাকে থাকে উঠেচে ঝোপের মাথা পৰ্য্যন্ত আগাগোড়া ভৰ্ত্তি। এত নীচু ও অতি উচুতে ও ফুল কি করে গেল তাই ভাবি । ঋতুতে ঋতুতে কত কি ফুল ফোটে আমাদের দেশের বনে ঝোপে, আমার দুঃখ হয় এর সন্ধানও কেউ রাখে না, নাম পৰ্য্যন্ত জানে না । অথচ সুন্দরকে যারা ভালবাসে —তারা বাংলার নিভৃত মাঠ, বনঝোপের এই অনাদৃত অথচ এই অপূর্ব সুন্দর ফুলকে তারা কখনো ভুলবে না। বেলেডাঙ্গায় গিয়ে সোঁকরার দোকানে বসে গল্প করলাম। ছোট খড়ের ঘরে দোকান। বঁাশের বেড়া । ননী সোঁকরার মেজ ছেলে বিড়ি বাধাঁচেতার দোকান ঘরের সামনে একটা নতুন কামার দোকান হয়েচে—সেখানে হাল পোড়াচ্চে। হালের চারধারে ঘুটের সনসনে আগুনে অনেক লোক বসে আগুন পোয়াচ্চে। দোকানের পেছনের বেড়ায় ধুৱফল ফুটে আছে ষেদিকে চাই সেদিকেই এই ফুল-এক জায়গায় মাঠের মধ্যে থাকে থাকে কতদূর পর্য্যন্ত উঠেচে এই ফুলের ঝাড়। রাঙা রোদ ও রাঙা সূৰ্য্যাস্ত শীতকালের নিজস্ব । এমন অস্ত আকাশের শোভা অন্য সময় দেখা बांश नां । যুগল বোষ্টমের সঙ্গে দেখা ফিরবার পথে-সে বল্পে তার চলচে না আমি তার (}.T. পড়ববার ব্যবস্থা করে দিতে পারি। কিনা ৷ কাল আবার ক্যাম্প টুলটা নিয়ে কুঠীর মাঠের নিভৃত বনঝোপের ধারে গিয়ে বসলুম। ধুরফুল কি অপূর্ব শোভাতেই ফুটেচে। পাখী এত ভালবাসি কিন্তু কাক ছাড়া কলকাতাতে আর কোনো পাখী নেইএখানে কত কি অজস্র পাখীর কলকাকলি, গাছপালা বন ঝোপের কি সীমারেখা, যেন নৃত্যশীল নটরাজ, ওপারের কাশচরে শিমুল গাছটা দেখা যাচ্চে, নীলাকাশে রৌদ্র ঝলমল করচে। একটা বাবলাগাছের ফাক দিয়ে চাইলে কোন অজানা দেশের কথা মনে আনে-শীতের অপরাহে বাংলার এই নিভৃত পল্লীপ্রান্তে যে কি সৌন্দৰ্য্য ভরে থাকে, চোখে না। দেখলে সে বোধহয় নিজেই বিশ্বাস করতুম না। আর দেখলাম এক
পাতা:তৃণাঙ্কুর - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২২
অবয়ব