পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৪২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় অধ্যায় মতিঝিল পূর্ণিমার রাত্রিতে পুনরায় আসিতে নটাবর প্রতিশ্রুত হইলেন। পূর্ণিমা আসিল। সন্ধ্যাবেলা নটবর সেই বাগানে আসিয়া দেখিলেন যে, মালী তখন সে স্থানে নাই। অন্য একটি বাগানে আর কয়েকজন উৎকলাবাসীর সহিত তাহার বাসা। তাহার অনুসন্ধানে নটাবর সেই স্থানে গমন করিলেন। মালীকে দেখিয়া নটাবর বলিলেন, — “ভূতের বাড়ীর নিকট যে বড় বাড়ীটি আছে, তাহাতে দেখিলাম আলো জুলিতেছে। সে বাড়ীতে কেহ আসিয়াছে?” মালী বলিল,- “হী! গোকুলবাবুর বেহাই, সেই মা-লক্ষ্মীর পিতা, দুই-চারি দিনের নিমিত্ত সপরিবারে ঐ বাটীতে আসিয়াছেন। তাহার স্ত্রী নাই, কেবল এক কন্যা; আমার মা-লক্ষ্মীর সেই ভগিনী। আর কে কে আসিয়াছে, তাহা জানি না। গোকুলবাবুর পুত্র, সেই হতভাগা নবীনকেও আজ ঐ বাড়ীতে দেখিয়াছি।” রাত্রি যখন দুই প্রহর হইল, তখন নটাবর ও মালী আস্তে আস্তে সেই ভূতের বাড়ীতে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। যে ঘরে তালা বন্ধ ছিল, নিঃশব্দে দুই জনে তাহার পাশ্বে বারেণ্ডায় দাড়াইলেন। ঘরের একটি জানালা খোলা ছিল। কিন্তু ঘরটি তখন অন্ধকারে পূর্ণ ছিল। দুইজনে কিছুই দেখিতে পাইলেন না। প্রায় আধা ঘণ্টা পরে সহসা সেই ঘরের ভিতর নীলবর্ণের আলোক জুলিয়া উঠিল। মালী ইঙ্গিত কুক্মিা দেখাইল। নটাবর দেখিলেন যে, ঘরের ভিতর টেবিলের পার্থে পরমাসুন্দরী এক য়ুৰ্ৱতী একখানি চৌকিতে বসিয়া আছেন। তাহার পশ্চাতে সেই চাকর-চাকরাণীর কৃষ্ণ দুইটি দাড়াইয়া আছে। তাহদের চক্ষু— কোটির হইতে নীলবর্ণের অগ্নিশিখা as । টেবিলের উপর বাক্সর মত ছোট একটি ইংরেজী বাদ্যযন্ত্র রহিয়াছে বঙ্কি ণ পরে যুবতী সেই বাদ্যযন্ত্রটির স্থানে স্থানে টিপিতে লাগিলেন। তাহা হইতে শব্দ নিৰ্গত হইল। সেই সুরে যুবতী সেই গীতটি আরম্ভ করিলেন । “কেন এত নিদয় হইলে? অবসান নিশি, অস্ত গেল শশী, দাসীরে ভুলিয়া নাথ কোথায় রহিলে।” এই কয়টি কথা ধীরে ধীরে সুমধুর স্বরে গাহিয়াই যুবতী ভয়ানক চীৎকার করিয়া উঠিলেন। ঘরের ভিতর সেই নীলবর্ণের আলোক নিৰ্ব্বাণ হইয়া গেল। সেই হৃদয়বিদারক কাতর শব্দ শুনিয়া নটাবর ভয়ে বিহবল হইয়া পড়িলেন। পদদ্বয় তাহার থারথার কাপিতে লাগিল। সেই সময় আর একটি যুবাপুরুষের উপর তাঁহার দৃষ্টি পতিত হইল। বারেণ্ডার নিম্নে বৃক্ষে ঠেস দিয়া লোকটি দাড়াইয়া আছে। সেও ভয়ে কঁাপিতেছে। সেই মুহূৰ্ত্তে মালীর দৃষ্টিও তাহার উপর পড়িল। “নরাধৱ পাপিষ্ট পশু! স্বামী হইয়া এরূপ পতিব্ৰতা স্ত্রীর গলায় তুই ছুরি মারিয়াছিস! মায়ের কাছে সত্য করিয়াছিলাম বলিয়া, তুই সে সময় ফাঁসি হইতে বঁচিয়া গিয়াছিস। কিন্তু আজ তোরে যমে টানিয়া এ স্থানে আনিয়াছে। আজ তােরে মারিয়া আমি ফাঁসী যাইব ।” এইরূপ বলিয়া উন্মত্তপ্রায় হইয়া মালী সেই লোকটির প্রতি ধাবিত হইল। বড় বাড়ীর দিকে লোকটি দ্রুতবেগে পলাইতে লাগিল। মালীও তাহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ দৌড়িতে লাগিল। দুই 8Sty দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.comস্থিািকস্ত"********