পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৭৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চম পরিচ্ছেদ ডমরুধারের তপস্যা সন্ন্যাসীর দেহে প্রবিষ্ট হইয়া আমি উঠিয়া বসিলাম। তাহার পর ক্ৰোধে আমি সন্ন্যাসীকে বলিলাম,- “ভণ্ড!! আমার শরীর ছাড়িয়া নিজের শরীরে পুনরায় প্রবেশ কর।” সন্ন্যাসী উত্তর করিল,— “এ পৃথিবীতে অন্ধ হইয়া দুঃখে কালযাপন করিতেছিলাম। ভোগবাসনা এখনও আমার পরিতৃপ্ত হয় নাই। মানস করিয়াছিলাম যে, কোন যুবা ধনবান লোকের শরীর আশ্রয় করিব। সেরূপ লোকের যোগাড় করিতে পারি নাই। কাজেই তোমার জীর্ণ শরীরে প্ৰবেশ করিতে বাধ্য হইয়াছি। তোমার এই শরীর দ্বারা এখন সুখাদ্য ভক্ষণ করিব, নানারূপ আমোদ-প্ৰমোদ করিব। তোমার বিবাহসম্বন্ধ হইয়াছে। তোমার শরীরে আমি বিবাহ করিব, তোমার গৃহিণীকে লইয়া ঘরকন্না করিব। মিছামিছি। তুমি গোল করিও না। লোকের নিজের যেরূপ অভ্যাস হয় অর্থাৎ শরীরকে আত্মা বলিয়া মনে হয়, অন্য লোকেরও সেইরূপ হয়। তোমার শরীর দেখিয়া লোকেরও সেইরূপ হয়। তোমার শরীর দেখিয়া সকলে বলিবে যে, এই ডমরুধার; আমার শরীর দেখিয়া সকলে বলিবে যে, এই সন্ন্যাসী। কেহই বিশ্বাস করিবে না যে, আমার আত্মা তোমার শরীরে প্রবেশ করিয়াছে। শঙ্করাচাৰ্য্য ও হস্তামিলকের গল্প শুনিয়া থাকিবে। আজ তাই হইয়াছে! বেশীর ভাগ কেবল একটু “হের-ফের।” ক্ৰোধে অধীর হইয়া হাতড়াইতে হাতড়াইতে আমি র গলা টিপিয়া ধরিলাম। কিন্তু তখন আমি পাঁচ শত তিপ্লান্ন বৎসরের পুরাতন শরীরে ছিলাম। তাহার উপর আবার দুই চকু অন্ধ। সন্ন্যাসীর আমি কিছুই করতে পৃষ্টি না। হাসিয়া সে দূরে আমাকে ফেলিয়া দিল । আমার দেহধারী সন্ন্যাসী পুনরায় বার্ল,-“যদি গােলমাল কর, তাহা হইলে তােমার ঘোরতর অনিষ্ট হইবে। তোমার চার্কারের দ্বারাই তোমাকে আমি এই বাড়ী হইতে দূর করিয়া দিব। এ অন্ধ ও বৃদ্ধ শরীর লইয়া তখন তুমি কি করিয়া দিনযাপন করিবে? আমার শিষ্যদ্বয় এ ব্যাপার অবগত আছে, তাহাদিগকে ডাকিতে পাঠাইয়াছি। তাহাদের সহিত আস্তে আস্তে আমার আস্তানায় গমন কর। প্ৰাতঃকালে এক ঘণ্টাকাল তাহারা তোমাকে নীচের দিকে মুখ করিয়া বুলাইবে । সমস্ত দিন তুমি বায়ু ভক্ষণ করিয়া থাকিবে । ঘোর রাত্রিতে চুপি চুপি আহার করিবে। যতদিন তোমার ঐ বৰ্ত্তমান শরীর জীবিত থাকে, ততদিন তোমাকে আমি খাইতে निद ।” আর উপায় কি? আমি নীরব হইয়া বসিয়া রহিলাম। সন্ন্যাসীর দুই জন চেলা আসিয়া আমার দুই হাত ধরিয়া লইয়া চলিল। অন্ধ দুইটি চক্ষু দিয়া দরদর ধারায় অশ্রুপাত হইতে লাগিল। বিন্দী গোয়ালিনীর চালা ঘরে আমাকে লইয়া গেল। সে রাত্রি মাটির উপর পড়িয়া কীদিয়া কাটাইলাম। পরদিন প্রত্যুষে চেলা দুই জন আমার দুই পায়ে দড়ি বঁধিয়া আমগাছের ডালে ঝুলাইয়া দিল। এক ঘণ্টাকাল অধোমুখে আমি বুলিতে লাগিলাম। সে যে কি যাতনা, তাহা আর তোমাদিগকে কি বলিব। অন্ধ, তা না হইলে চক্ষু দুইটি ঘোর রক্তবর্ণেরঞ্জিত হইত। সন্ন্যাসীর গায়ের বর্ণও কাল ছিল, তা না হইলে মুখ লাল হইয়া যাইত। ঘোর কষ্ট! ঘোর কষ্ট! কেন যে দম আটকাইয়া মরিয়া যাই নাই, তাহাই আশ্চৰ্য্য! লম্বোেদর প্রভৃতি একবাক্যে বলিয়া উঠিল,- “ঈশ! তুমি ত সামান্য বিপদে পড়া নাই।” छzाद्रम्-5छि sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro ԳԵՏ»