পাতা:দর্পণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বলতে পারত। তার সামনে ওরা কি বলে এ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে ?

  • কৃষ্ণেন্দুকে সিগারেট ধরাতে দেশলাই দিতে গিয়ে গণি কি মমতার বুকে কনুই ঠেকাবে ?

“এই রেখাকে ৷” ফুটপাথ ঘেসে ট্যাক্সি দাড়াল, আইন বঁাচানো পাতলা কাপড়ে। ঢাকা অকথ্য যৌবনে ফোলা একটি ন্যাংটো স্ত্রীলোকের বিজ্ঞাপন টাঙ্গানো পুরুষত্বহানির অব্যর্থ ওষুধ বিক্রী এক দোকানের সামনে ! হীরেন লক্ষ্য করল, কুঁজো হয়ে বসে টাকিওলা চোখা নাক ঘুমন্ত শকুনির মত দোকানদারটি মোটর থামার শব্দে হঠাৎ জীবন্ত হয়ে খবরের কাগজ থেকে মুখ তুলে আশার ঔৎসুক্যে সিধা হয়ে বসেছে । হীরেনের ইচ্ছা হল, হাসে । এগার বছর আগে কলেজে সেকেণ্ড ইয়ারে পড়বার সময় একদিন এমনি ভাবে, হয়ত প্ৰায় এমনি সময়ে, কলেজ যাবার পথে এই খানে গাড়ী থামিয়ে এই লোকটির কাছ থেকে বশীকরণ কবচ কিনেছিল। ক্লাশের একটি মেয়েকে বশ করতে চেয়ে । মেয়েটির নাম আজ মনে নেই । চেহারাও কল্পনা হয়ে গেছে । শুধু মনে আছে তার সর্বাঙ্গের স্পষ্ট উদ্ধত আহবান, হাসি কথা বিতরণের প্ৰাণঘাতী কাৰ্পণ্য আর অন্তহীন অবহেলা । কবচ ধারণ করে আলাপ জমাতে গিয়ে সে পাত্তা পায় নি। তারপর একদিন, অত্যন্ত হঠাৎ একদিন তাকে গাড়ীতে উঠতে দেখে মেয়েটি এসে বলেছিল, আপনার নিজের গাড়ী ? বাড়ী পৌছে দেবেন। আমায় ? 'তৃতীয় দিন বাড়ী পৌছে দেবার পথে সে হঠাৎ গভীর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে তার কাধে মাথা রেখে গ এলিয়ে দিয়েছিল। বশীকরণ কবচোর এই অব্যৰ্থ ক্ষমতার পরিচয় পেয়ে স্তম্ভিত হয়ে সে সেইদিন সন্ধ্যায় দশটাকার নোট ভরা খাম। এই মহাপুরুষ দোকানীর হাতে দিয়েই পালিয়ে গিয়েছিল। মেয়েটিকে আর 8 (wife)-s