বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-নিশচয়ই। বাহাত্তরের ওপর বয়সী। এর উত্তরে কি বলা উচিত ঠিক বঝতে পারিনে। খাব খানিকটা বিস্ময় ও সম্পন্দ্রমের ভাব মাখের ওপরে এনে ফেলার চেষ্টা করি—যদিও একটি বহুধা ভদ্রমহিলার বয়স বাহাত্তর হওয়ার মধ্যে এমন একটা আশচষ্য ব্যাপার কিছই নেই। ভদ্রলোক আমার দিকে চেয়ে সগন্ধেব বললেন-মা এখনও সংসারের যাবতীয় রানা সব নিজের হাতে করে থাকেন। এই যা খাচ্চেন, সব তাঁর নিজের হাতে। আমি এবার আর নিরািত্তর রইলাম না, উত্তর দেওয়ার পথ খাঁজে পেয়েচি। বললাম-তাই বলন। এ রকম রান্না কি কখনো একালের মেয়ের হাতোিরখেয়েই আমার সন্দেহ হয়েছিল, এমন রান্না তো অনেকদিন খাইনি-এ না জানি কার হাতের ভদ্রলোক হাসি হাসি মাখে আমার দিকে চেয়ে বললেন-পারবে কেউ আজকালের মেয়ে ? বলন! —TINGS STANT ! KIGGS CANG--CER*- আমি অবজ্ঞাসাচক হাসি টেনে আনি মাখে। মনের গোপন তলায় একটা প্রশন বার বার উকি মারছিল-ভদ্রলোক অবিবাহিত না বিপত্নীক ? কিংবা সন্ত্রীর সঙ্গে বনিবনাও নেই, এমন নয় তো ? --আর দরখানা পরী নিন—না না, লজা করবেন না মশাই, লতাজা করলে ঠাকবেন। রাত্রে। সেই বিলাসপারে ভোর, তার আগে কিছ মিলবে না। ভালো খাবার খাওয়া-দাওয়া শেষ হল দাজনেরই। ভদ্রলোক নিশ্চয়ই খব মাতৃভন্তু, তাঁর মাতৃদেবীর গািণকীৰ্ত্তন শািনতে হল অনেকক্ষণ বসে। শোবার ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও শয্যা আশ্রয় করতে পারলাম না। তারপর কখন ঘামিয়ে পড়েছিলাম, আমার ঠিক মনে নেই, একটা কি সেন্টশনে দেখি ভদ্রলোক আমায় ঝাঁকুনি দিয়ে বলচেন-ও মশায়, উঠন-একট চা খান-খব, ভালো চা এই স্টেশনের-এই ধরন কাপট উকি মেরে জানলা দিয়ে দেখি সেন্টশনের নাম ঝাস গডা। বললাম, রাত কত মশাই ? -তিনটে পাঁচিশট্রেন ছাড়লে চেয়ে দেখি রেলের দাধারে শেষরাত্রের অন্ধকারে কেবল বন আর বন। মধ্যপ্রদেশে এসে পড়া গেল নাকি ? আরও অনেক সেন্টশন চলে গেল। বন আর পাহাড়, পাহাড় আর বন, শেষরাত্রের ঘন অন্ধকারে কেমন অপরাপ মনে হচ্ছে। কখনো ও লাইনে আসিনি-বনের এমন শোভা যে এ লাইনে আছে তা আমার জানা ছিল না। সেদিক থেকে বেঙ্গল নাগপাের রেলপথ একটি বিশেষ লাইন, যা কিনা চক্ষন্মান ও প্রকৃতি রসিক যাত্রীর সামনে আদিম ভারতের ছবি ধীরে ধীরে খালে ধরবে, তার নিবিড় অরণ্যানী ও শৈলশ্রেণী, কোল, মােন্ডা, ওঁরাওদের বসিতের সারি, পথানের অনায্য নাম ইত্যাদি মনে করিয়ে দেয় প্রাক-আৰ্য্য যাগের ভারতবর্ষের কথা। জানােলা খালে অন্ধকারে বনশ্রেণীর দিকে চেয়ে বসে রইলাম। ঘািম আমার চোখ থেকে চলে গেল। পয়সা খরচ করে দেশ বেড়াতে এসেচি, ঘমোবার জন্যে নয়। আমার সহযাত্রী কিছদ্মক্ষণ বসেছিলেন, তারপর আবার শহয়ে পড়লেন। ট্রেনের কামরার মধ্যে কোনো শব্দ নেই, সবাই ঘামাচ্চে, আমার নীরব উপভোগের বাধা জন্মায় এমন কোনো বিবাদী সদর কানে আসে না, মনে হল বহকাল ধরে চেয়ে থাকলেও চোখ আমার কখনো শ্ৰান্ত হয়ে উঠবে না, মন তার আনন্দকে হারাবে না। রাতের অন্ধকারে সে বিশাল বনভূমির দশ্য যে না দেখেচে, সে পথিবীকে SOS