পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধৰনি দ্বারা দ্বিখন্ডিত নৈঃশব্দ্য আর বনবিহঙ্গ কাকলী। প্রকৃতির এমন নিভূত লীলা নিকেতনে মন সন্টিমখী হয়ে ওঠে, বিশেবর সন্টার অপব্ব রহস্যের দিকে মন যায় চলে-এখানে মানষ। ছোট হয়ে গেছে-এই আকাশ, এই কোয়ার্টজাইটের চাই বাঁধানো "সবিশাল শিলাসন, এই বনানী, এই ফেনপঞ্জবাহী দ্রািতপতনশীল জলধারা—এরাই পরেশাবাব, সেখানে বসে গান গাইছেন। মিঃ সিনহা ডায়েরী লিখচেন—সবোধ সব্বদা ব্যস্ত, সে চলে গিয়েচে মোটরে। কল্যাণীকে একবার আনতে হবে এখানে । কতদর এখান থেকে বারাকপাির, কুঠীর মাঠের আমার সেই পেয়ারাগাছের তলাটা, কলে কলে ভরা ইছামতী ও তার তীরে কাশের ফল ফোটা চরাভূমি ! সেই আমাদের নৌকো করে বনগাঁয়ে যাওয়া আজ যেন সবপন বলে মনে হয় না কি ! সত্যিই মনে হচ্চে কে যেন আমায় হাত ধরে দেশে-বিদেশে নিয়ে নিয়ে বেড়াচ্চেন নতুবা তো গ্রামে বসে বারিক মন্ডল ও ফণিকাকার সঙ্গে ধান বোনার গলপ করতাম, হরিপদদার সঙেগ মোকদ্দমার ষড়যন্ত্র করতাম। ভগবানকে এজন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ । তারপর কি চমৎকার রাস্তা দিয়ে মোটরে এসে বসলাম। সবোধবাব, যে রাস্তা • দিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, সে রাস্তা এটা নয়, এপথে বড় বড় বনস্পতির ঘন ছায়াএক ক্ষদ্র ঝর্ণার ওপর পাথরের সাঁকো, একটা শিউলি গাছে যথেষ্ট কুড়ি ধরেচে। যেন ঋষির পবিত্ৰ তপোবনের সহান। তারপর চারিদিকে উচ্চ উচ্চ পাহাড়ের শোভাও অদভূত। মোটর চলচে। কালকার রাত্রের বনভূমি ভেদ করে। বনকলমী ফল আরও কত কি ফল বনের মধ্যে ফটোেচ এই বর্ষাশেষে।। ২oo০ হাজার ফন্ট উচ, টেবো বাংলোর ধার দিয়ে গাড়ী চলেচে-পাশে বর্ষার উদ্দাম এক পাহাড়ী নদীর গৈরিক জলধারা। শিউলি গাছ মাকুলিত হয়েচে এ বনেও । সবোধকে বলি-সাহিত্যিকদের জন্য আপনারা P.W.D. থেকে এখানে একটা বাংলো তৈরি করে দিন না। যেখান থেকে সমতলভূমির দশ্য সন্দর দেখা যায়, সেখানেই একথা উঠলো। জলতেন্টা পেয়েছিল, রাঁচি রোডে নেমে নাকটি বাংলোতে এসে গাড়ী থামিয়ে জলের সন্ধানে গোল ড্রাইভার। বেলা তখন একটা, কিন্তু ডাকবাংলোর চৌকিদারের টিকি দেখা গেল না। ৰ কোথাও। তখন জলের আশা ছেড়ে দিয়ে চক্ৰধরপরে এসে জল খাওয়া গেল, নগেন বাবার ছেলে জল নিয়ে এল। রাত্ৰে সবোধবাবার বাড়ী দা চারটি ভদ্রলোকের সামনে গল্প পাঠ করলাম। আজ দিনটি বেশ পরিস্কার। পরশ রাত্রে সারারাত্ৰি হৈ-হৈ-এর পরে খাব আরামের "ঘম হয়েচে। সবোধ ও অবিনাশবাব এসে চা খাওয়ার সময়ে গলপ করলেন--চালের দর, ট্রেনে ভীষণ ভিড়। প্রেমচাঁদের গলপ বেটি কী ধন’ ও ‘সাহাগ কী শাড়ী’’ দটি হিন্দীতে পাঠ করা হোল চায়ের টেবিলে। এখানে বেশ সাহিত্যিক আবহাওয়া। মনে পড়াচে কাল এ সময়ে সৌন্দৰ্য্যময় বনভূমির মধ্যে বসে ছিলাম। এখনও যেন চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি। সেই উত্তঙ্গ শৈলগাত্র, রাঙা মাটি ও চণা পাথরের ধৰস নামা খাড়া দেওয়াল, সেই অজস্র Lantana পাপ। আজ আকাশ খািব নীল, হেসডি ডাকবাংলোতে কাটানোর উপযক্ত দিন যেন এগালি। সন্ধ্যায় সবোধবািবর বাড়ীতে চায়ের আসরে আমার গলপ দটি পড়া হোলসুগ্ৰীক যােবক হেলিওডোরাস কি করে বাস দেবের ভক্ত হোল ও ভিড়'। রাত্রে ফিরে এসে খেয়ে শয়ে পড়ি। কোলহান সপোরিস্টেডেণ্ট মিঃ কে মিত্র, আরও কয়েকটি উকীল ܠܓ