বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হয়ে যায় আমার। সতরাং প্রাণভরে এই নিজজনতা ও নৈঃশব্দের বাণী শািনলাম ৰসে বসে কত রাত পয্যন্ত। সন্ধ্যাবেলা এখানে বসলে ভয় হয়-এই বঝি কোন কলকাতার চেনজার বাবরা পত্রপরিবারসহ হাওয়া খেতে এসে পড়ে। কলকোলাহল করতে করতে | এত রাত্রে মন একেবারে নিরদ্বেগ সেদিক থেকে। বেশ জানি এ সময় জনপ্রাণী আসবে না। এদিকে। মন শঙ্কাশন্য ও নিরফেবগ না হোলে কি প্রকৃতির সৌন্দৰ্য্যসন্ধা উপভোগ করা যায় ঠিকমত ? আমি ক'দিন ধরে ভাবচি এমনি সব নিজজন সন্থানের কথা। সেদিন পাঠকবাবি বলছিল, রায়পর (C.P.) থেকে ১৮৪ মাইল দরে বাস্তার স্টেটের রাজধানী জগৎদলপরের গলপ। ধামতরি ছাড়িয়ে (রায়পর থেকে ৫o মাইল দর) ঘন বন পথের দধারে-এমন এক বনের মধ্যে মানববসতি থেকে বহন্দরে খাব বড় বড় গাছের ছায়ায় শিলাসনে বসে আছি, সকাল বেলাটি, অসংখ্য পক্ষীকুলের কলরব, আদরে স্নিগ্ধসলিলা গোদাবরী (ওখানে অবিশ্যি গোদাবরী নেই, আমার কলপনা) কুলকুল, রবে: উপলবন্ধর পথে বনপাদপের ছায়ায় ছায়ায় বয়ে চলেচে। নিভয়ে বিচরণশীল মািগযথে আমার শিলাসনের কাছে কাছে তৃণ আহরণ করচে—এমন একটি ছবি প্রায়ই মনে আসে । কাল বিকেলে ফণি এল-ওর সঙ্গে অমরবাব এসেচেন কিনা দেখতে গেলাম। পথে ব্রাউন সাহেবের সঙ্গে দেখা-ব্রাউন বল্লে, অমরবাব আসেনি। তারপর রেলের বাঁধের ওপর দনুজনে বসলাম, বেশ চাঁদ উঠেচে। পরশ কল্যাণী, উমা ও বৌমাকে নিয়ে ফলডংরি বেড়াতে গিয়ে অনেকক্ষণ বসে ছিলাম। আজ মিঃ সিনহা চিঠি লিখেচোন তাঁর সঙ্গে সারেন্ডা বেড়াতে যাবার জন্যে। ৮ই তারিখে এখান থেকে চাইবাসা যাবো-সেখান থেকে সারেন্ডা। রওনা হবো। সারেন্ডা বিখ্যাত অরণ্য, প্রাকৃতিক দশ্যও অতি অপব্ব । সিং ভূমের বিখ্যাত বন। ওখানে বেড়াতে যাওয়ার সংযোগ কি ছাড়তে আছে ? ঘাটশিলা থেকে বন ভ্রমণের জন্য বেরিয়ে রাত ১১টার গাড়ীতে চাইবাসা রওনা হই। সঙ্গে রইল ওভারসিয়ার নসিরাম। বেশ শীত রাত্রে। সিনহা সারেশডা বনের ভার পেয়েছিলেন এ মাসে। গোটা বনটা ঘরে আসবেন, আমায় নিমন্ত্রণ করেচেন। তাঁরই আহবানে আসা। চাইবাসাতে সবোধবাবর আপিসে বসে সকালে চা খেলাম ও অনেক গলাপগজেব হোল। কাল বেলা একটার সময় চাইবাসা থেকে রওনা হয়ে এলাম। হাটগামারিয়ায় পরেশ সান্যালের ওখানে। তারপর বনপথে মোটর ছটলো। টকটকে লাল মাটির পথ ও দধারে ঘন জঙ্গল। আগে নোয়ামান্ডী, পরে এলাম গয়া। দই জায়গাতেই টাটা ও আর একটি কোম্পানীর লৌহ সংগ্রহের ব্যবস্থা রয়েচে-লোহার পাহাড় কেটে লৌহপ্রস্তর টন টন গাড়ী বোঝাই করে নিয়ে চলেচে। গয়াতে একটি বাঙালী ভদ্রলোকের বাড়ী চা-পানান্তে আবার ঘনতর জঙ্গলের পথে এলবুম কুমডি বাংলোতে। নিবিড় বনের মধ্যে দিয়ে পথ, কারো নদী পার হয়ে অদভুত বনশোভা---ফটেন্ত পিটনিয়া ও বন্য কাণগুনের প্রাচায্যের মধ্যে সন্ধ্যায় গাড়ী কুমডি পৌছে গেল। ডাকবাংলোর কাছেই বনের ভেতর দিয়ে কোইনা নদী কলকলা শব্দে বয়ে চলেচে। আজ শক্লিা চতুৰ্দশীকাল রাসপর্ণিমা। জ্যোৎস্নারাত্রে আমরা পায়ে হেটে কোইনা নদী পার হয়ে বনের মধ্যে কতদার বেড়াতে গেলাম। লোকালয় নেই কোথাও—গয়া ছাড়িয়ে ষোল মাইল অবিচ্ছেদে অরণ্যপথ দিয়ে এসে বনবিভাগের এই বাংলো। বনের পথে বেড়াতে বেড়াতে SRO