পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Σ 8O. দিবরাত্রির কাব্য নিয়ে লড়াই করা। সুপ্রিয়া মাথা নত করল। এত কথা কি জন্য ? পরিচয়ের জন্য নয়, উদ্দেশ্য নির্ণয়ের জন্য নয়, সময় কাটানোর জন্যও নয় । পরিচয় তাদের যা আছে আর তা বাড়বে না, পরস্পরের উদ্দেশ্য সম্বন্ধেও ভুল হবার তাদের কোন কারণ নেই, কথা না বললেও তাদের সময় কাটবে। তবু প্ৰাণপণে তার কথা বলছে। চিরকাল এমনভাবে মানুষ কত কথা বলতে পারে ? আজিও অনিশ্চয়তা বজায় থাকার অভিমানে সুপ্রিয়া কথা বন্ধ রাখল। হেরম্ব চুপ করল বক্তব্যের অভাবে । একথা মিথ্যা নয় যে, কথা নিয়ে লড়াই করাটাই চরম উদ্দেশ্যে দাড়িয়ে গেছে বলে সুপ্রিয়াকে বলার তার কিছুই নেই। কাছাকাছি বসে এমনি ভাবে পরের মত তারা চিন্তা করছে, আনন্দ ঘরে এসে জিজ্ঞাসা করল, “তোমার কাছে টাকা আছে ? দশটা টাকা দিতে পারবে ?” ‘টাকা কি হবে আনন্দ ?” “বাবা চাইল ।” হেরম্ব অবাক হয়ে গেল । “মাষ্টারমশাই টাকা চাইলেন ? টাকা দিয়ে তিনি কি করবেন ?” আনন্দ এ প্রশ্নের জবাব দিতে পারল না । সে জানে না। টাকা নিয়ে সে চলে গেলে হেরম্ব চেয়ে দেখল সুপ্রিয়া খুব সরলভাবে অত্যন্ত কুটিল হাসি হাসছে। আনন্দের সঙ্গে হেরম্বের আর্থিক সম্পর্কটি আবিষ্কার করা মাত্র তার যেন আর কিছু বুঝতে বাকী নেই। এতক্ষণে সে নিৰ্ভয় ও নিশ্চিন্ত হল। প্ৰতিবাদ করতে গিয়ে হেরম্ব চুপ করে গেল । প্রতিবাদ শুধু নিস্ফল নয়, অশোভন।। Ә о.