পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিবরাত্রির কাব্য 8R উপায় নেই। তবু সুপ্রিয়াকে জীবনের সঙ্গে গেথে ফেললে হয় ত চিরদিনের জন্য জীবন এত বেশী অপূর্ণ থাকবে যে, একদিন আপশোষ করতে হবে হেরম্বের এই আশঙ্কা কমে আসে। তার মনে হয়, আজি একদিনে সুপ্রিয় ক্ষণে ক্ষণে নিজের যে নব নব পরিচয় দিয়েছে হয়ত তা বহু সংযম, বহু সাবধানতা ও কার্পণ্যের বাধা ঠেলেই বাইরে এসেছে । হয়ত পাঁচবছর ধরে সুপ্রিয়া যে ঐশ্বৰ্য্য সংগ্রহ করেছে তা অতুলনীয়, কল্পনাতীত । কিন্তু তবু হেরম্ব সাহস পায় না । নিজেকে দান করার | চেয়ে কঠিন কাজ জগতে কি আছে ? অত বড় দাতা হবার সাহস হেরম্ব সহসা সংগ্ৰহ করে উঠতে পারে না । , , বলে, “মরবি কেন, সুপ্রিয়া ? লক্ষ্মী মেয়ের মত তুই বেঁচে থাকিবি।” সুপ্রিয়া চলে গেলে হেরম্ব শয্যা ত্যাগ করে। দরজা খুলে বাইরে যায়। থানার পাহারাদার বলে, “কিধার যাতা বাবু ?” “ঘুমানে যাতা । নিন্দ হোতা নেহি ।” আকাশ মেঘে ঢাকা । ওদিকে বিদ্যুত্যৎ চমকায় । শুকনে ঘাসে-ঢাকা মাঠে হেরম্ব আস্তে আস্তে পায়চারি করে । তাজ রাত্রে যদি বৃষ্টি হয় কাল হয়ত মাঠের বিবৰ্ণ বিশীর্ণ তৃণ প্রাণবস্ত হয়ে উঠবে।