পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

এসেছে বলে সৈন্যসংগ্রহে আমাদের একটুও কষ্ট হয় নি। এপ্রসঙ্গে আমাদের একমাত্র সমস্যা ছিল কি করে যত শীঘ্র সম্ভব শিক্ষার্থীদের শিক্ষা-ব্যবস্থা করা যায়। এক বৎসর পূর্ব্বের তুলনায় আমাদের সেনাদল এখন বিপুল বর্দ্ধিত-শক্তি। এর জন্য সন্তুষ্টি প্রকাশ করেও আমাকে একথা বলতে হচ্ছে যে, যারা ব্যাকুল আগ্রহে সৈন্যদলে যোগদানের জন্যে তৈরী হয়ে আছে, তাদের সবাইকে শিক্ষা-শিবিরে গ্রহণ করতে পারলে আমি আরও খুসী হতে পারতাম। পূর্ব্ব-এশিয়ায় আমাদের জন্য সম্ভাব্য শিক্ষার্থী বহু আছে, প্রয়োজন হলে যে কোন মুহূর্ত্তে তাদের ডেকে আনা যাবে। কাজেই আমাদের স্বাধীনতা-সংগ্রামের সাফল্যপূর্ণ অবসান না হওয়া পর্য্যন্ত ভবিষ্যতে আমাদের সেনাবাহিনীর সম্প্রসারণ অব্যাহত থাকবে।

 আমাদের অন্যতম উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব, পূর্ব্ব-এশিয়ার ভারতীয় নারী সমাজে অভূতপূর্ব্ব জাগরণ দেখা দিয়েছে এবং ‘ঝাঁসীর রাণী’-বাহিনীকে যোগদানের জন্যে আমরা যে আবেদন জানিয়েছি, সে আবেদনে তাঁরা সাগ্রহে সাড়া দিয়েছেন। এই বাহিনীর যে সব দলের শিক্ষা সমাপ্ত হয়েছে তাদের বৈপ্লবিক উৎসাহ, তৎপরতা এবং সামরিক কর্ম্মনৈপুণ্য প্রত্যেকের মনেই গভীর প্রভাব বিস্তার করেছে। আমার মনে এ বিষয়ে কোন সন্দেহই নেই যে, তাদের যখন প্রত্যক্ষ রণে প্রেরণ করা হবে তখন তারা তাদের ব্যবহার দ্বারা মাতৃভূমি তথা ভারতীয় নারী-সমাজের সম্মান ও গৌরব বৃদ্ধি করবে।

 ১৯৪৩এর অক্টোবর মাসে যখন আসন্ন সংগ্রামের জন্যে আমাদের প্রস্তুতি পূরো দমে চলছিল এবং আমাদের সৈন্যদল ইন্দো-ব্রহ্ম সীমান্তের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল, তখন পৃথিবীর সর্ব্বত্র সুবিদিত এবং অনুসৃত, বৈপ্লবিক কর্ম্মপদ্ধতিসম্মত একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ আমাদের পক্ষে অত্যাবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সেটা হচ্ছে ১৯৪৩-এর ২১শে অক্টোবর