পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পারেন। বিদেশস্থ ভারতীয়েরা এ ব্যাপারে সাক্ষ্য দিতে পারবেন যে, আমি দেশত্যাগের পর এমন কোন কাজ করি নি যার ফলে কোন প্রকারে আমার দেশের গৌরব আত্মসম্মান কিংবা স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হতে পারে। আমি যা কিছু করেছি, তা আমার জাতীর মঙ্গলের জন্যে, বিশ্বের সামনে ভারতের মর্য্যাদা বৃদ্ধির জন্যে এবং ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনকে এগিয়ে দেবার জন্যে করেছি।

 মহাত্মাজী, পূর্ব্ব-এশিয়ায় যুদ্ধারম্ভের গোড়া থেকে বিরুদ্ধ দল জাপানের বিরুদ্ধে প্রবল এবং বিধ্বংসী প্রচারকার্য্য চালাচ্ছে। কাজেই আমি জাপান সম্বন্ধে কিছু বলব—বিশেষ করে এই কারণে যে বর্ত্তমানে আমি জাপানী গবর্নমেণ্ট সেনাবাহিনী এবং জনগণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় কাজ করছি। এমন এক সময় ছিল, যখন জাপানের সঙ্গে ব্রিটিশদের মিত্রতা ছিল। যতদিন পর্য্যন্ত ইঙ্গ-জাপ মৈত্রী বজায় ছিল, ততদিন আমি জাপানে আসিনি। যতদিন পর্য্যন্ত দুটি দেশের মধ্যে স্বাভাবিক কূটনৈতিক সম্বন্ধ বিদ্যমান ছিল, ততদিন আমি জাপানে আসিনি। জাপান তার ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করার পরে— বৃটেন এবং আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার পরে— আমি স্বেচ্ছায় জাপান পরিদর্শন করতে মনস্থ করেছিলাম। আমার দেশের অন্যান্য অনেক লোকের মতোই কয়েক বৎসর ধরে আমি জাপবিরোধী প্রচারকার্য্য করেছিলাম। আমার দেশের অন্যান্য অনেক লোকের মতোই আমিও বুঝতে পারতাম না, ১৯৩৭ অব্দে জাপান হঠাৎ চীন আক্রমণ করে বসল কেন? এবং আমার দেশের অন্যান্য লোকের মতো ১৯৩৭ ও ১৯৩৮ অব্দে আমার সহানুভূতি ছিল চুংকিং-এর প্রতি। আপনার হয়তো স্মরণ আছে, কংগ্রেসের প্রেসিডেণ্ট হিসাবে ১৯৩৮-এর ডিসেম্বর মাসে আমিই চুংকিং-এ চিকিৎসক-বিমান পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু জাপান পরিদর্শনের পরে আমি যা বুঝতে পেরেছি এবং আমাদের দেশের

৬২