পাতা:দুই বাড়ি - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

→-ঐদিকে এস, দিয়ে যাওগ্রামের মধ্যে ভদ্রলোকের সঙ্গে বেয়াদবি করা ছনুর সাহসে কুলাইল না, নয়তো মনের মধ্যে অনেক কড়া কথা রামতারণ চৌধুরীর বিরুদ্ধে জমা হইয়াছিল। সে কাছে আসিয়া ডালা নামাইয়া কহিল-কতকের মাছ নেবেন ? —দাও আনা দুইয়ের-দেখি-বলিয়া রামতারণ চুপড়ির ভিতর হইতে নিজেই বড় বড় মাছ বাছিয়া তুলিতে লাগিলেন। ছনু বলিল-আর নেবেন না বাবু, দু-আনার মাছ হয়ে গিয়েচে-বলি ফাউ তো দিবি ? দু-আনার মাছ একজায়গায় এক সঙ্গে নিচ্চি, ফাউ দিবিনে ? মাছ দিয়া ডালা তুলিতে তুলিতে ছনু বিনীতভাবে বলিল-বাবু, পয়সাটা ? রামতারণ বিস্ময়ের সুরে বলিলেন-সোঁ কি রে ? সকালবেলা নাইনি ধুইনি, এখন বাক্স দুয়ে পয়সা বার করব কি রে? তোর কি বুদ্ধিাশুদ্ধি সব লোপ পেয়ে গেল রে ছনু ? ছনু মাথা চুলকাইতে চুলকাইতে বলিল-না, না, তা বলিনি বাৰু, তবে আর দিনের পয়সাটা তো বাকি আছে কিনা। এই সবশুদ্ধ, সাড়ে চার আনা পয়সা এই দুদিনের।--আর ওদিকের দরুন ন’-আনা । রামতারণ তাচ্ছিল্যের ভাবে ঘাড় নাড়িয়া বলিলেন-যা, এখন যা-ওসব হিসেবের সময় নয় এখন। গ্রামের ভদ্রলোক বাসিন্দা যারা, তঁরা চিরকাল এইভাবে গ্রামের নিম্নশ্রেণীর নিকট হইতে কখনো চােখ রাঙাইয়া কখনো মিষ্ট কথায় তুষ্ট করিয়া ধারে জিনিসপত্র খরিদ করিয়া চালাইয়া আসিতেছেন-ইহা এ গ্রামের সনাতন প্ৰথা। ইহার বিরুদ্ধে আপীল নাই। সুতরাং, ছনু মুখ বুজিয়া চলিয়া যাইবে ইহাই নিশ্চিত, কিন্তু সন্ধ্যাবেল রামতাৱণ চৌধুরী SO