পাতা:দুই বাড়ি - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-আজ্ঞে, মা বললেন দধিযাত্রা করে বেরুতে, হয়, তাই ঘরে পাতািট জুই দিয়ে দুটো ভাত খেয়ে ভোরবেলা-হু, তা বটে। তবে কথা কি জানো বাবা, সব বরাত ; ও দধিযাত্ৰাও বুঝিনে, কিছুই বুঝিনে-বরাতে না থাকলে দধিযাত্রা কেন, তোমার ও ঘোলযাত্রা, মাখনযাত্রাতেও কিছু হবার যে নেই, বুঝলে বাবা ? কথা শেষ করিয়া যদু বঁড়িয্যে চারিপাশে উপবিষ্ট মুহুরী ও মকেলবুন্দের প্রতি সগৰ্ব দৃষ্টি ঘুরাইয়া আনিলেন। পরে আবার বলিলেন—এই মহকুমায় প্রথম যখন প্র্যাকটিস করতে এসেছিলাম-সে আজ পয়ত্রিশ বছর আগেকার কথা । একটা ঘটি আর একটা বিছানা সম্বল ছিল। কেউ চিনত না, শ্যাম সাউদের খড়ের বাড়ি তিন টাকা মাসিক ভাড়ায় এক বছরের জন্য নিয়ে মোক্তারী শুরু করি । তারপর কত এল কত গোল আমার চোখের সামনে, আমি তো এখনো যাহোক টিকে আছি। একজন মক্কেল বলিল-বাবু, আপনার সঙ্গে কার কথা ? আপনার মতো পসার জেলার কোর্টে কজনের আছে ? অনেকেই মোক্তারবাবুর মন যোগাইবার জন্য একথায় সায় দিল। যদু-মোক্তার নিধুর দিকে চাহিয়া বলিলেন-বাবাজি, সারা পথ গরুর গাড়িতে এসেচ, তোমাদের গ্রাম তো নয়। সেখানে যাওয়ার চেয়ে কলকাতায় যাওয়া সোজা। একটু বিশ্রাম করে নাও, তারপর কথাবার্তা হবে এখন বিকেলে । মহকুমার টাউন থেকে কুড়ুলগাছি পাঁচ মাইল পথ। নিধু মাঝে মাঝে ম্যালেরিয়ায় ভোগে, স্বাস্থ্য তত ভালো নয়, এইটুকু পথ আসিয়াই সত্যই সে ক্লান্ত হইয়া পড়িয়াছিল। যাদু বঁড়িয্যের বৈঠকখানায় ফরাসের উপর শুইবামাত্র সে ঘুমাইয়া পড়িল । বৈকালের দিকে যদুবাৰু কোর্ট হইতে ফিরিলেন, গায়ে চাপকন, মাথায় èt