পাতা:দুই বোন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
দুই বোন

রইল না, ছেলেটি মারা গেল। বাপের মনে বিষম দুঃখ কিছুতেই শান্ত হােতে চাইল না। মৃত্যু তাঁকে তত বাজেনি কিন্তু এমন একটা সজীব সুন্দর বলিষ্ঠ দেহকে এমন ক’রে খণ্ডিত করবার স্মৃতিটা দিনরাত তাঁর মনের মধ্যে কালো হিংস্র পাখির মতাে তীক্ষ্ণ নখ দিয়ে আঁকড়ে ধরে রইল। মর্মশােষণ ক’রে টানলে তাঁকে মৃত্যুর মুখে।

 নতুন পাস-করা ডাক্তার, হেমন্তের পূর্ব সহাধ্যায়ী, নীরদ মুখুজ্জে ছিল শুশ্রূষার সহায়তাকাজে। বরাবর জোর ক’রে সে ব’লে এসেছে, ভুল হচ্ছে। সে নিজে ব্যামাের একটা স্বরূপ নির্ণয় করেছিল, পরামর্শ দিয়েছিল দীর্ঘকাল শুকনাে জায়গায় হাওয়া বদল করতে। কিন্তু রাজারামের মনে তাঁদের পৈত্রিক যুগের সংস্কার ছিল অটল। তিনি জানতেন যমের সঙ্গে দুঃসাধ্য লড়াই বাধলে তার উপযুক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী একমাত্র ইংরেজ ডাক্তার। এই ব্যাপারে নীরদের ’পরে অযথামাত্রায় তাঁর স্নেহ ও শ্রদ্ধা বেড়ে গেল। তাঁর ছোটো মেয়ে ঊর্মির অকস্মাৎ মনে হােলো, এ মানুষটার প্রতিভা অসামান্য। বাবাকে বললে, “দেখাে তাে বাবা, অল্প বয়স অথচ নিজের ’পরে কী দৃঢ় বিশ্বাস, আর অতবড়ো