পাতা:দুই বোন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুই বোন
৫৫

নিরুপায়ভাবে এসে বসে। মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়, জিজ্ঞাসা করে, কেমন আছ। তখনি শর্মিলা উত্তর দেয়, “তুমি মিথ্যে ভেবো না, আমি ভালোই আছি।” সেটা বিশ্বাস্য নয়, কিন্তু বিশ্বাস করতে একান্ত ইচ্ছা ব’লেই শশাঙ্ক অবিলম্বে বিশ্বাস করে ছুটি পায়।

 শশাঙ্ক বললে, “ঢেঙ্কানলের রাজার একটা বড়ো কাজ আমার হাতে এসেছে। প্ল্যানটা নিয়ে দেওয়ানের সঙ্গে আলাপ করতে হবে। যত শীঘ্র পারি ফিরে আসব ডাক্তার আসবার আগেই।”

 শর্মিলা অনুযোগ ক’রে বললে, “আমার মাথার দিব্যি রইল তাড়াতাড়ি ক’রে কাজ নষ্ট করতে পারবে না। বুঝতে পারছি ওদের দেশে তোমার যাবার দরকার আছে। নিশ্চয় যেয়ো, না গেলে আমি ভালো থাকব না। আমাকে দেখবার লোক ঢের আছে।”

 প্রকাণ্ড একটা ঐশ্বর্য গড়ে তোেলবার সংকল্প দিনরাত জাগছে শশাঙ্কের মনে। তার আকর্ষণ ঐশ্বর্যে নয়, বড়োত্বে। বড়ো কিছুকে গড়ে তোলাতেই পুরুষের দায়িত্ব। অর্থ জিনিসটাকে তুচ্ছ ব’লে অবজ্ঞা করা চলে তখনি, যখন তাতে দিনপাত হয় মাত্র। যখন তার চূড়াকে সমুচ্চ ক’রে তোলা যায় তখনি সর্বসাধারণে