পাতা:দুই বোন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুই বোন
৬৯

“অবলা রমণীকে অরক্ষিত অবস্থায় সবুজ পাগড়িধারীর হাতে সমর্পণ করে দিতে সংকোচ নেই এই বুঝি তােমার শিভলরি।”

 শেষকালে ওর টানাটানিতে শশাঙ্ক কাজ ফেলে যায় মােটর হাঁকিয়ে। এইরকম উৎপাত চলছে টের পেলে শর্মিলা বিষম বিরক্ত হয়। কেননা ওর মতে পুরুষের সাধনার ক্ষেত্রে মেয়েদের অনধিকার প্রবেশ কোনােমতেই মার্জনীয় নয়। ঊর্মিকে শর্মি লা বরাবর ছেলেমানুষ ব’লেই জেনেছে। আজো সেই ধারণাটা ওর মনে আছে। তা হােক, তাই ব’লে আপিসঘর তো ছেলেখেলার জায়গা নয়। তাই ঊর্মিকে ডেকে যথেষ্ট কঠিনভাবেই তিরস্কার করে। সে তিরস্কারের নিশ্চিত ফল হােতে পারত, কিন্তু স্ত্রীর ক্রুদ্ধ কণ্ঠস্বর শুনে শশাঙ্ক স্বয়ং দরজার বাইরে এসে দাঁড়িয়ে ঊর্মিকে আশ্বাস দিয়ে চোখ টিপতে থাকে। তাসের প্যাক দেখিয়ে ইশারা করে, ভাবখানা এই যে, “চলে এসাে, আপিসঘরে বসে তােমাকে পােকার খেলা শেখাব।” এখন খেলার সময় একেবারেই নয়, এবং খেলবার কথা মনে আনবারও সময় ও অভিপ্রায় ওর ছিল না। কিন্তু দিদির কঠোর ভর্ৎসনায় ঊর্মির মনে বেদনা লাগছে