বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:দুই শিষ্য - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দারোগার দপ্তর, ২০১ সংখ্যা।

 আমার প্রশ্ন শুনিয়া তিনি একটা দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিলেন। পরে আমার মুখের দিকে চাহিয়া ঈষৎ হাসিয়া বলিলেন, “আপনার অনুমান যথার্থ। আমার ন্যায় সন্ন্যাসীর সহিত পুলিসের কোনরূপ সংস্পর্শ থাকা কর্ত্তব্য নহে; এ সকল কার্য্য গৃহীরই শোভা পায়। কিন্তু কি করিব? আমায় বাধ্য হইয়া আজ এই সায়ংকালে ঈশ্বরারাধনা ত্যাগ করিয়া আপনার আশ্রয়ে আসতে হইয়াছে। শুনিয়াছি, আপনার দ্বারা এরূপ অনেক কার্য্য সিদ্ধ হইয়াছে।”

 আমি আগন্তুকের কথা তালরূপ বুঝিতে পারিলাম না। কিছুক্ষণ তাঁহার দিকে চাহিয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, আপনার কি হইয়াছে বলুন? কিসে আপনার সাহায্য করিতে পারি বলিয়া দিন?”

 আগন্তুক পুনরায় আমার দিকে তীব্র কটাক্ষপাত করিলেন; আমার আপাদমস্তক নিরীক্ষণ করিলেন। পরে কি ভাবিয়া বলিলেন, “আমার নাম মনোহরগিরি। আমি কাল-ভৈরবের মন্দিরের সেবায়েত।”

 কলিকাতার দক্ষিণে কোন এক গ্রামে কালভৈরবের এক মন্দির আছে। শুনিয়াছিলাম, তাঁহার সেবার জন্য মাসিক এক সহস্র মুদ্রা নির্দ্দষ্ট আছে। মনোহরগিরি যে তাহার তৎকালীন সেবাযেত তাহাও আমার জানা ছিল। কিন্তু এ পর্য্যন্ত আমি সেবায়েতকে স্বচক্ষে দেখি নাই, কিন্তু তাঁহার সহিত কোনরূপ সংস্রবে আসি নাই। আগন্তুককে কালভৈরবের সেবায়েত জানিয়া তাঁহার প্রতি আমার ভক্তি শত গুণে বর্দ্ধিত হইল। আমি অতি বিনীতভাবে বলিলাম, “আপনার নাম এ অঞ্চলের অনেকেই অবগত আছেন।