পাতা:দুধ-ভাত - ইন্দিরা দেবী চৌধুরানী.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুধ-ভাত

রাজপুত্তুর পক্ষিরাজ ঘোড়া নিয়ে আছে, আমরা গেলে দেখা ক’রে তবে সে পক্ষিরাজে ক’রে বেড়াতে যাবে।

 সেদিনের কথা মিণ্টুুর পরিষ্কার মনে আছে।—অনেক কষ্ট ক’রে সে যখন বাড়ীর কাছাকাছি প্রায় এলো: কই ছোটকা, রাজপুত্তুর? ছটকা বললেন: ঐ যে দেখছ দূরে বন্ধ বড় বাড়ীটা, ঐটায় রাজপুত্তুর থাকে—আর ঐ তার ঘোড়া। মিণ্টুু দেখলো একটা বন্ধ বাড়ী বটে, কিন্তু যেমন বাড়ী সে ভেবেছিল তেমন নয়, আর ঘোড়া? আরে রাম—যে রোগা রোগা ঘোড়াগুলো নিয়ে বাবুরা ভাড়া ক’রে চ’ড়ে বেড়ায়, তারই একটা শুকনো ঘোড়া সেই দরজার কাছে দাড়িয়ে আছে, বোধ হয় সোয়ারী নেবে—ঐ নাকি ছাই পক্ষিরাজ।

 ছোটকার উপর সেদিন তার কি না রাগ হয়েছিল। পরে সে নিজের কানে শুনেছে ছছাটকা বলছে: মিণ্টুুটা কি হাঁটতে চাইছিল? রাজপুত্তুরের কথা বলাতে ও হেঁটে এলো।

 উঃ, কী ভীষণ মিথ্যেবাদী! অথচ ওকে বললে: আমাদের আসতে দেরী হয়ে গেছে কিনা তাই রাজপুত্তুর লেখাপড়া করতে চ’লে গেছে, আবার পরে একদিন আসবে।

 সেই থেকে ছোটকার উপর তার যা রাগ আছে। আবার বলা হয়, মিথ্যে কথা বলতে নেই।

 কিন্তু আজকে তার সব চেয়ে রাগ—দুধ-ভাত নিয়ে। আজ সে একটা কাণ্ড করবেই। দুধের বাটি যদি উল্টে না দেয় তা’হলে তার নামই মিণ্টু নয়। আর বাড়ী থেকে সে আজ চ’লে যাবে যেদিকে তার চোখ যায়। এ কথার আর কোনো নড়চড় নেই।

 আজ স্কুল নেই, রবিবার—মা, ছোট কাকিমা সবাই রান্নাঘরে।