পাতা:দুর্নীতির পথে - বিনয়কৃষ্ণ সেন.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও সংযম
২৭

করিয়া নিজে হালকা হইতে চায় এবং পরগাছার ন্যায় জীবন যাপন করিতে ইচ্ছা করে; সুতরাং সে লুণ্ঠনকারী, চোর, জুয়াচার অপেক্ষা ভাল নহে। অন্যান্য শক্তির ন্যায় শারীরিক শক্তির সদ্ব্যবহারের জন্য আমরা সমাজের নিকট দায়ী। সমাজ এ বিষয়ে নিরস্ত্র। সমাজের মঙ্গলের জন্য ঐ শক্তি হিসাব করিয়া ব্যবহার করার দায়িত্ব আমাদের উপর ন্যস্ত হইয়াছে, সেজন্য এ দায়িত্ব অন্যান্য দায়িত্ব অপেক্ষা গুরুতর।”

 ‘স্বাধীনতা বাহির হইতে সুখের মনে হয়, পরন্তু ইহা বাস্তবিক এক বোঝা স্বরূপ। ইহার ধারণা প্রথমেই হইতে পারে। মন ও বিবেকের ভিতর ঐক্য আছে তা জানি; এ দুটির ভিতরই আমাদের শক্তি নিহিত আছে; পরন্তু উভয়ের ভিতর বিস্তর পার্থক্যও দেখা যায়। যখন মন ও বিবেক বিপরীত পথে চলিতে বলে, তখন কাহাকে মানিব? আমাদের বিবেক বুদ্ধি হইতে যাহা উৎপন্ন তাহাকে মানিব, না অত্যন্ত হীন ইন্দ্রিয়লালসা হইতে যাহা উৎপন্ন তাহাকে মানিব? যদি বিবেকের জয় হইলে সমাজের উন্নতি হয়, তবে এই দুটির ভিতর একটি রাস্তা বাছিয়া লওয়া কিছু শক্ত নহে। তবে তর্কের খাতিরে এ কথাও বলা চলে যে, শরীর ও আত্মার যুগপৎ বিকাশ চাই। সে বেশ কথা! কিন্তু ইহাও মনে রাখিতে হইবে যে, আত্মার সামান্য বিকাশের জন্যও কিছু না কিছু সংযম পালন করিতে হয়। প্রথমে এই বিলাসের ভাবকে নষ্ট করিয়া দিলে, পরে যাহা ইচ্ছা হওয়া যায়।

 গ্যাব্রিয়েল সিলেস লিখিয়াছেন, “আমরা মানুষ হইতে ইচ্ছা করি এ কথা বলা খুব সোজা, কিন্তু ইহা এক কঠোর কর্ত্তব্য এবং ইহা পালনে সকলেই অল্প বিস্তর অক্ষম। ‘আমরা স্বাধীন হইতে চাই’ ইহা ঘোষণা করিয়া লোকের অন্তরে আমরা ত্রাসের সঞ্চার করি। সহজাত সংস্কারের গোলামরূপে ইচ্ছামত কাজ করাকে যদি