পাতা:দুর্নীতির পথে - বিনয়কৃষ্ণ সেন.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
দুর্নীতির পথে

পালন করার দৃষ্টান্ত দেখিয়া, তাহারা যৌবনকাল সংযতভাবে কাটান সম্ভব মনে করিবে, বিবাহিতেরাও ইহা হইতে এই শিক্ষা পাইবে যে, যতই সঙ্গত হউক না কেন, তাহাদের স্বার্থচিন্তা যেন কখনও নৈতিক মহত্ব ও প্রকৃত প্রেমের উচ্চতর আহ্বানকে ছাপাইয়া না উঠে।

 ফোরষ্টার বলেন, “ব্রহ্মচর্য্য-ব্রত বিবাহ-প্রথার মূল্য কমায় না; বরং ইহা দাম্পত্যবন্ধনের পবিত্রতা বৃদ্ধির সাহায্য করে; কারণ ইহা স্পষ্টভাবে দেখায় যে, প্রকৃতির তাড়না সত্ত্বে মানুষ ইন্দ্রিয়ের অধীনতা হইতে মুক্ত হইতে পারে। সাময়িক খেয়াল ও ইন্দ্রিয়ের তাড়নার সময় ব্রহ্মচর্য্য-ব্রত বিবেকের ন্যায় কাজ করে। ব্রহ্মচর্য্য এই হিসাবে বিবাহিতের পক্ষে কবচ সদৃশ যে, ইহার কল্যাণে বিবাহিত স্ত্রী-পুরুষে বুঝিতে পারে, তাহারা একে অপরের ইন্দ্রিয়তৃপ্তির সাধন মাত্র নহে এবং প্রলোভন সত্ত্বে তাহারা ইন্দ্রিয়ের উপর প্রভুত্ব করিতে সক্ষম। যাহারা চিরকৌমার্যকে অস্বাভাবিক ও অসম্ভব বলিয়া তাচ্ছিল্যের সহিত উড়াইয়া দিতে চায়, তাহারা জানে না তাহারা কি করিতেছে। তাহারা দেখিতে পাইতেছে না, যে চিন্তার ধারা অনুসারে তাহারা আলোচনা করিতেছে, কঠোর তর্কশাস্ত্র অনুসারে সেই পথে চলিলে তাহাদিগকে বেশ্যাবৃত্তি ও বহুবিবাহ সমর্থন করিতে হইবে। বিষয়বাসনার বেগ যদি অদম্যই হয়, তবে বিবাহিত লোকেই বা কিরূপে পবিত্রজীবন যাপন করিবে? তাহারা ভুলিয়া যায় যে, রোগ বা অন্য কোনো কারণে কখনও কখনও দম্পতির একজনের অক্ষমতার জন্য অপরের আজীবন ব্রহ্মচর্য পালন করা অনিবার্য্য হইয়া পড়ে। কেবল এই কারণেই ব্রহ্মচর্য্যের যত মহিমা আমরা স্বীকার করিব, এক-পত্নী-ব্রতের আদর্শও তত উঁচুতে স্থাপন করা হইবে।