পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

মণ্ডলে, দীপের লোহিতাভা পড়ায়, সেই চিন্তাগম্ভীর মুখগুলি আরও বিভীষিকাময়। রাজকুমার দারাই সেই কক্ষের নিস্তদ্ধতা ভঙ্গ করিয়া বলিলেন “বড়ই এক সাংঘাতিক ব্যাপারের মন্ত্রণার জন্য, আমরা আজ এই কক্ষে সমবেত। এখানে যে তিনজন উপস্থিত আছেন, তাঁহার। সকলেই আমার অন্তরঙ্গ মিত্র। সকলেই আমার জন্য জীবন বিসর্জ্জন করিতে প্রতিশ্রুত। কিন্তু আজ হইতেই আমাদের কার্য্য আরম্ভ করিতে হইবে। দিল্লীর “ময়ুর-সিংহাসন” উত্তরাধিকার সূত্রে আমার। আমি সম্রাটের জ্যেষ্ঠ পুত্র। আমার অন্য ভ্রাতারা যাহাতে সেনাবলে বলীয়ান হইতে না পারেন, তাহার বন্দোবস্ত আজই আমাদের করিতে হইবে। এই রক্তবর্ণ কক্ষের মধ্যে বসিয়া আমাদের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হইতে হইবে,প্রয়োজন হইলে রক্তস্রোতে সাঁতার দিয়া আমরা বাদশাহী “তক্ত-তাউস” অধিকার করিব।”

 “এ শোণিতোৎসবের মূল শক্তি প্রচুর অর্থ। আজ আমি আপনাদের প্রাণের দোস্ত বলিয়া সম্বোধন করিতেছি। আপনারা এখনই এই তরবারি, আর আমার মস্তকের এই রত্নময় উষ্ণীস্, স্পর্শ করিয়া প্রতিজ্ঞা করুন—“সর্ব্বস্ব পণে আপনারা আমার সহায়তা করিবেন। আপনাদের জীবনধনসম্পত্তি, আমার উদ্দেশ্য সিদ্ধি না হওয়া পর্য্যন্ত, আমার দখলে থাকিবে।”

 কথাগুলি শেষ করিয়া, সুলতান দারা তাঁহার মস্তক হইতে

১৩১