পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

এমন অনেক ব্যাপার আছে, যাহা অনেক সময় কোমল হৃদয়া পত্নীর নিকট ব্যক্ত করাও সুবুদ্ধির কাজ নয়।”

 সত্য সত্যই অতীত রজনীর সেই ব্যাপারটা, সেই রক্তবর্ণ গুপ্ত কক্ষের স্মৃতি,সুজাবেগের মনে বড়ই একটা দুর্ন্নিমিত্তের ছায়া আনিয়াছিল। যাহা কিছু সেখানে হইয়া গেল, সবই যেন স্বপ্নের মত। তিনি সুলতান দারার তরবারি ও মুকুট স্পর্শ করিয়া এক ভীষণ প্রতিজ্ঞা করিয়া আসিয়াছেন। ষে উপায়ে হৌক, এক সপ্তাহের মধ্যে তাঁহাকে চারি লক্ষ টাকা শাহজাদার হাতে তুলিয়া দিতেই হইবে। দিলে—ঘোর দারিদ্র, আর না দিলে অপমান—লাঞ্ছনা কিম্বা দারার গুপ্ত ঘাতকের হস্তে শোচনীয় মৃত্যু! অথচ এ ভয়ানক গুপ্ত কথা কাহারও নিকট মুখ ফুটিয়া বলিবার বা কোন পরামর্শ জিজ্ঞাসার উপায় নাই! বিশ্বাসভাজন অতি অন্তরঙ্গ বন্ধু, কিম্বা একাত্মহৃদয়া স্নেহময়ী পত্নী, কাহাকেও বিশ্বাস করিয়া এই ভয়ানক কথা বলিতে সাহসে কুলায় না। এ সাংঘাতিক ব্যাপারের কথা বাহিরে ব্যক্ত হইলেই, যাহা দ্বারা হইয়াছে, তাহার শোচনীয় মৃত্যু ভীষণ নির্য্যাতন, অতি নিশ্চিত—অব্যর্থ।

 ধরিতে গেলে, নবাব সুজা খাঁ প্রকারান্তরে তাঁহার পত্নীর নিকট সত্য কথাই বলিয়াছিলেন। কিন্তু সন্দেহ জিনিষটা বড়ই ভয়ানক। বাহারবানুর ব্যাপারে, আনারের মনে একটা দারুণ সন্দেহ জাগিয়া উঠিয়াছে। এই সন্দেহ বশেই অভাগিনী আনারউন্নিসা মনে মনে ভাবিয়া লইল—এটা বাহারবানু সম্পর্কীয়

১৪৫