পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

হাস্যোজ্জ্বল হইয়া উঠিল। সে বুঝিল, আনার-উন্নিসা বড়ই দুর্ব্বল চিত্তা রমণী। এবারেও তাহার বাজী জিৎ হইয়াছে।

 পরক্ষণেই তাহার মনে একটা সন্দেহের ছায়া দেখা দিল। সে ভাবিল—“আনার-উন্নিসার এমন কি কথা—তাহার সঙ্গে থাকা সম্ভব, যাহার জন্য সে তাহাকে আজ এতটা বিনীত ভাবে ডাকিয়া পাঠাইয়াছে! যাহাই হউক না কেন, ব্যাপারটা যে কি, তাহা একবার আমায় দেখিতে হইবে।”

 বাহারবানু সন্ধ্যার প্রতীক্ষা করিতে লাগিল। যথা সময়ে তাহার সেই ঈস্পিত সন্ধ্যা আসিল। সে ভৃত্যকে বলিয়া এক বলবান অশ্বযোজিত বিচিত্র শিগ্‌রামে সওয়ার হইয়া, নবাব সুজাখাঁর বাটীর উদ্দেশে চলিল।

 আনার জুমেলিকে ইতি পূর্ব্বেই উপদেশ দিয়া রাখিয়াছিল, বাহারবানু আসিলেই,সে সরাসর তাহাকে উপরের কক্ষে তাহার নিকটে লইয়া যাইবে।

 আনার সে দিন ভূবনমোহিনী মূর্ত্তি ধরিয়াছে। তাহার যে অঙ্গে যা ধরে, সেই সব বহুমূল্য অলঙ্কারে সে সজ্জিতা। ফিরোজা রঙ্গের এক সুন্দর সাঁচ্চা শাড়ী, তাহার উপর সেই রঙ্গেরই আঙ্গরাখা ও ওড়না। কণ্ঠদেশে বিলম্বিত নবাব সুজাখাঁর প্রদত্ত নূতন হীরার হার। এই হার ছড়াটীর দাম পঞ্চাশ হাজার টাকা। সেই হারের উজ্জ্বল হীরকগুলির উপর কক্ষ মধ্যস্থ অসংখ্য দীপের আলোকছটা পড়ায়, আনার যেন সর্ব্বোজ্জ্বলকান্তিময়ী অপ্সরার মত দেখাইতেছিল। বলা বাহুল্য,

১৫০