পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

একদিকে অতুল ঐশ্বর্য্য—অপর দিকে ঘোর দারিদ্র। তাহার পিতাও নানাদিক দিয়া ভাবিয়া, এখন তাহাকে নবাবের সহিত বিবাহিত করিতে খুবই ইচ্ছুক। আবার যখনই এই ঐশ্বর্য্যবান নবাবের কথা সে ভাবে, তাহার ভবিষ্যৎ সুখ সৌভাগের কথা চিন্তা করে, তখনই আনারের হৃদয়ের নিভৃতকেন্দ্রে, মীর লতিফের অফুরন্ত ভালবাসা মাখান মুখখানি জাগিয়া উঠে। তাহাতে তাহার সুখৈশ্বর্য্যের সকল বাসনাই ভাসিয় যায়।

 এইরূপ একটা কঠোর সমস্যার মধ্যে পড়িয়া, আনার মনের শাস্তি হারাইয়াছিল। মনের কথা সে কাহারও নিকট প্রকাশ করিত না। এমন কি, যে জুমেলির কাছে সে এ পর্য্যন্ত কোন কথাই গোপন করে নাই, তাহাকেও সে এসম্বন্ধে কোন কথা বলিতে সাহস করিত না।

 এই পবিত্র জুম্মাবারে, পীর-মহরমে সিরণী দিবার জন্য সে জুমেলিকে সঙ্গে লইয়া আসিয়াছে। সে দিনটি রমণীগণের জন্য নির্দ্দিষ্ট। সুতরাং সকল অবস্থার মহিলাগণই সে ক্ষেত্রে সমবেত হইয়াছেন। আমীর ওমরাহ, ধনী দরিদ্র, সকল শ্রেণীর নারীগণ সেই উদ্যানের নানাস্থানে ঘুরিতেছেন।

 জুমেলি, ও আনার, দুইজনে এক ক্ষুদ্র প্রস্তরাসনে বসিয়া সেই অগণিত জনস্রোত দেখিতেছে। কেহ বা আসিতেছে, কেহ যাইতেছে, কেহ গল্প করিতেছে, আবার কেহবা সেই ক্ষুদ্র মেলার কোন বিপণীর সম্মুখে দাঁড়াইয়া জিনিস পত্র কিনিতেছে।

 জুমেলি কিয়ৎক্ষণ আনারের পার্শ্বে স্থিরভাবে বসিয়া গল্প

৫৭