পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

ছেলেবেলা হইকে মানুষ করিয়াছি। উহার উপর আমার পুত্রাধিক স্নেহ জন্মিয়াছে।’ অমন শান্ত, শিষ্ট, সত্যবাদী সরল প্রাণ, নির্দ্দোষ চরিত্র যুবক আমি খুব কমই দেখিয়াছি। আমার পুত্র নাই। ঐ এক মাত্র কন্যা। তুমি ঐ মীর লতিফের সহিত আমার আনারের বিবাহ দাও। আমাকে যে কালরোগে ধরিয়াছে, তাহাতে আমি যে বেশী দিন বাঁচিব, এরূপ সম্ভাবনা নাই। বিবাহটী হইলে, মরিবার পূর্ব্বে সুখে মরিতে পারি।”

 কিন্তু আনারের পিতা জামালখাঁ, মনে মনে একটা উচ্চ আশা পোষণ করিতেন। কেই বা তাহা না করে? তাঁহার কন্যার রূপের প্রশংসা চারিদিকে। আর এই সময়ে দুই এক জন বড় ওমরাহ্ ও ধনীর বাড়ী হইতে, আনারের বিবাহ সম্বন্ধ আসিতে লাগিল। সুতরাং জামাল খাঁ বড়লোকের দিকেই ঝুঁকিলেন।

 আনারের পিতা মনে মনে ভাবিলেন, যদি কোন বড় লোকের বাড়ীতে কোন কারণে আনারের বিবাহ না দিতে পারি, তখন মীর লতিফ ত আছেই। দেখাই যাক্ না, ভবিতব্য আমার কন্যার অদৃষ্টকে কোথায় লইয়া যায়।

 কিন্তু তিনি পত্নীকে প্রবুদ্ধ করিবার জন্য বলিলেন,— “মীর লতিফ এখন বাদশাহী সেনাদলে প্রবেশ করিয়াছে। এই সময়ে এই বিবাহটা ঘটাইলে, সে সংসারের মায়ায় বেশী আকৃষ্ট হইয়া পড়িবে। ঘরের ছেলে সে—সেত ঘরেই রহিল। এখন না হৌক, দুই মাস পরেই না হয় বিবাহটা হইবে।”

 আনারের মাতা স্বামীর মুখে এই কথা শুনিয়া আর কিছুই

৬৭