8b- দেবগণের মর্ত্যে আগমন লালাবাবুর মনে উদয় হইল—“বেল অর্থাৎ জীবন প্রায় গত হইল, পারে যাব অর্থাৎ কখন এ দুস্তর ভবনদী কি প্রকারে পার হব ?” এই ভাবিয়া সংসারে তাহার বৈরাগ্য হয় । তিনি বৈষ্ণবধৰ্ম্ম গ্রহণ করেন। ব্ৰহ্মা । সেই মহাপুরুষ এখানে আসিয়া কি কি সৎকাৰ্য্য করিয়াছিলেন ? এই কথাতে বরুণ দেবগণকে লইয়া লালাবাবুর কুঞ্জের দ্বারে উপস্থিত হইয়া দেখেন, বিস্তর লোক খাতাপত্ৰ লইয়া হিসাব করিতেছে। দেবতারা এক এক টাকা ভেট দিলে একজুন কেরাণী খাতাতে তাহাদের নাম ও কুঞ্জের ঠিকানা লিখিয়া লইয়া, কত দিন বৃন্দাবনে আছেন জিজ্ঞাসা করিয়া লইলেন। ব্ৰহ্মা। বরুণ ! তুমি লালাবাবুর বিষয় আমাকে বল । বরুণ। ইনি মুরশীদাবাদ জেলার অন্তর্গত জেমোর্কাদি নামক স্থানে জন্ম গ্রহণ করেন ; জাতিতে কায়স্থ। গবর্ণর হেষ্টিং সাহেবের দেওয়ান গঙ্গাগোবিন্দ সিংহের ইনি পৌত্র। ইহার প্রকৃত নাম দেওয়ান কৃষ্ণচন্দ্র সিংহ। ইনি কিছু সময়ের জন্ত কটক ও বদ্ধমানের কালেক্টরের দেওয়ানী করিয়াছিলেন। লালাবাবু যৌবনকালেই সংসার হইতে অবসর লইয়া বৃন্দাবনে বাইয়া বাস করেন। ঐ স্থানে মন্দির ও রাধা-কানু নামক সরোবর প্রতিষ্ঠা করেন । ইহার পর দেবগণ ঠাকুরবাড়ীর মধ্যে প্রবেশ করিলে বরুণ কহিলেন, লালাবাবু ঐ কৃষ্ণমূৰ্ত্তি প্রতিষ্ঠা করিয়া উহার নামে চল্লিশ হাজার টাকা আয়ের বিষয় করিয়া দেন । দেব-সেবার বরাদ প্রত্যহ একশত টাকা । প্রতিদিন এখানে পাচশত লোক প্রসাদ খাইয়া থাকে ৷ পনর দিনের বেশী একজনকে আহার দেওয়া হয় না। লালাবাবু স্বয়ং দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করিয়া যাহা পাইতেন, তাহাই আহার করিতেন। ব্ৰজমায়ীরা তাহাকে ভিক্ষা দিবার জন্ত রুটি প্রস্তুত করিয়া রাখিত। সেই হ’তে এখানে লালাবাবুর রুট নামে একপ্রকার রুটার নাম হইয়াছে। ব্ৰহ্মা । আহা! লালাবাবুকি মহাপুরুষই ছিলেন, তাহার বিষয় আরো বল।